পরশুরামে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে আবু বকর সিদ্দিক হত্যা মামলায় নিহতের ভাই ও ভাতিজাকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহা. সিরাজুদ্দৌলাহ কুতুবী এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় নিহতের ভাই আসামি মো. আবুল বশর আদালতে উপস্থিত ছিলেন, তবে তার ছেলে শরিফুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ জুলাই পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম অলকা গ্রামের মাস্টার বাড়িতে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে আবু বকর সিদ্দিক প্রকাশ কালা মিয়াকে নিজ বসতঘরে ঢুকে হত্যা করেন তার ভাই মো. আবুল বশর ও ভাতিজা শরিফুল ইসলাম।
 
এ ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় মো. আবুল বশর, তার স্ত্রী মোমেনা বেগম ও ছেলে শরিফুল ইসলামকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি আবুল বশর ও শরিফুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি আদালত অভিযোগ গঠন করে এবং ২৫ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক, পুলিশ কর্মকর্তা ও বাদীসহ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। 
 
রায় ঘোষণার সময় পলাতক থাকায় শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
এ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ও সাইফুল্লাহ রাসেল।
 
রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দীন খান। তিনি বলেন, এ হত্যা মামলায় দুই আসামিকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেছেন। আসামি শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার হলে সেদিন থেকেই তার সাজা কার্যকর হবে। মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় গত ২০ অক্টোবর। এরপর আদালত ২৮ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন, তবে রায় লেখা শেষ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করা হয়। ফেনীতে এটিই প্রথম আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।