কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদান কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর তালিকা চূড়ান্তের কথা জানিয়েছে ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার (১০ মার্চ) কৃষি প্রকৌশলী মুহাম্মদ আমজাদ হোসেন খান জানান, সহায়তা কর্মসূচি আওতায় কৃষি যন্ত্রপাতির জন্য ফেনীর ৬ উপজেলা হতে ২৬জনের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।


ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, তিন ধরণের কৃষিযন্ত্রের উপর ৫০শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকদের প্রদান করা হচ্ছে। এগুলো হল রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার, এটি চারা বপনের কাজে ব্যবহৃত হয়, এর বাজার মূল্য প্রকারভেদে ৩ লক্ষ হতে ১৪ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয়টি হল রিপার। এ যন্ত্রের মাধ্যমে ধানা কাটা হয়। এর বাজার মূল্য প্রকারভেদে ৫০ হাজার হতে দুই লক্ষ টাকা। তৃতীয়টি হল কম্বাইন হারভেস্টার। এর মাধ্যমে ধান কাটা, ধান মাড়াই, ঝাড়া এবং বস্তাবন্দী করা হয়। এর বাজার মূল্য প্রকারভেদে ১২ লক্ষ হতে ২৯ লক্ষ টাকা।

কৃষি প্রকৌশলী জানান, তালিকায় রিপার মেশিনের জন্য ৯জন এবং কম্বাইন হারভেস্টারের জন্য ১৭জন কৃষক এবং কৃষি উদ্যোক্তার নাম কৃষি উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।


তিনি জানান, কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, কৃষক সমিতি এবং উদ্যোক্তাদের যে কেউ এ সহযোগিতার অন্তর্ভূক্ত। তিনি জানান, আগ্রহী কৃষকদের তালিকা চেয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক ও কৃষি কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি রয়েছে। কমিটি উপকারভোগীর তালিকা চূড়ান্ত ঢাকার খামারবাড়িতে কৃষি যন্ত্রপাতি উন্নয়ন সহযোগিতা সেলে প্রেরণ করে।


অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন খান জানান, কৃষি শ্রমিকের অভাব, শ্রমিকের উচ্চ মূল্য, কৃষিতে মানুষকে অনাগ্রহী করে তুলছিল। এসব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ধান চাষ করলে উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে। কৃষক অবশ্যই লাভবান হবে। সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচবে। তিনি জানান, সরকার সারাদেশে কৃষকদের জন্য এ কর্মসূচি প্রদান করেছে।


কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপকারিতা প্রসঙ্গে কৃষি প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন খান বলেন, প্রতি একর কৃষি জমিতে ধান কেটে ঘরে আনতে ১৭জন শ্রমিকের প্রয়োজন। কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে মাত্র দুই ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া এবং বস্তাবন্দী করা সম্ভব। তিনি বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ হলে কৃষক কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবে।


ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রের জন্য তালিকভূক্ত ফেনীর পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, আমি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের জন্য আবেদন করেছি। মেশিন বাবদ ২৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে সরকার দেবে ১৪ লক্ষ, বাকি টাকা আমার। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ প্রসঙ্গে জসিম উদ্দিন বলেন, এ মেশিনের সাহায্যে অতি অল্প সময়ে ধান ঘরে তোলা সম্ভব। জনবলের জন্য অনেক সময় ফসল ঘরে তুলতে দেরী হয়। অত্যধিক খরচের কারণে লাভ কমে যায়, অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতিও হয়। উন্নত যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কৃষি লাভজনক ব্যবসা হবে।

কৃষিযন্ত্রপাতির উচ্চমূল্য প্রসঙ্গে জসিম উদ্দিন বলেন, ভর্তুকি দেয়া হলেও মেশিনপত্রের মূল্য অনেক বেশি। তাই ভর্তুকি পেলেও সবার পক্ষে তা কেনা সম্ভব হয় না।