করোনা ভীতিতেও রোগীর পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন ডাঃ মনজুর আহমেদ সাকী। রোগীদের নিরাপত্তায় অপেক্ষমান কক্ষে ছয় ফুট দুরত্বে আসন বিন্যাস করেছেন। চেম্বারে ঢুকবার পূর্বে রোগীর হাত জীবাণুমুক্ত করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছেন। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছেন। নিজের নিরাপত্তায় দেহে জীবাণুরোধী পোশাক ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয় করেছেন এবং ব্যবহার করছেন।


ডাঃ সাকী বলেন, করোনা সংক্রমণ ভীতি সমাজের সকল স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। সাংঘাতিক ছোঁয়াচে এ রোগে কে আক্রান্ত, তা বোঝার উপায় নেই। এ রোগ সনাক্তে ঢাকা ব্যতীত অন্য কোথাও কোনো রকম ব্যবস্থা নেই। তাই ডাক্তাররা রয়েছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে।


তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ একমাত্র রোগ নয়। নানাবিধ অসুখে ভুগে রোগী ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার হিসেবে রোগীকে ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। একইভাবে নিরাপত্তা পাওয়া আমার অধিকার।


তিনি জানান, করোনা ভাইরাস হতে নিজের সুরক্ষার জন্য দশ সেট ওয়ানটাইম গাউন, মাস্ক, গ্লাভসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করেছেন। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, টাকা দিয়েও ডাক্তারের সুরক্ষার সরঞ্জাম বাজারে সময়মত পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার দ্রুত এগিয়ে আসা উচিত।


ইতালীতে করোনা ভাইরাসে একদিন ৫জন ডাক্তারের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নত দেশে এত নিরাপত্তার মধ্যে থেকেও ডাক্তার রেহাই পাচ্ছেন না। এতে বোঝা যায় আমরা কতটা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।


ডাক্তারের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ডাঃ সাকী বলেন, বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) গুণবতীতে সারাদিনে ১০২ জন রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছি। এদের মধ্যে ৬৭জন জ্বর, কাশিতে ভুগছেন। এদের কারও কারও শ্বাসকষ্ট রয়েছে।


তিনি বলেন, এখন সিজনাল ভাইরাসের প্রভাব রয়েছে। কে সাধারণ জ্বরে ভুগছেন, কে করোনা আক্রান্ত তা পরীক্ষা ছাড়া বোঝার উপায় নেই। অথচ আমাদের হাতে পরীক্ষা-নীরিক্ষার কোনো সুযোগ নেই।


তিনি বলেন, এত ঝুঁকি থাকার পরও রোগীদের ছেড়ে যেতে চাই না, রোগীরা অসহায়বোধ করুক তা কখনো কাম্য না।


করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে তিনি বলেন, সব রোগীকে বলে যাচ্ছি তারা যেন ঘরে ঢুকবার আগেই গোসলখানায় কাপড় রাখবার ব্যবস্থা করেন। ঘরে ঢুকে আগে গোসল নেয়া জরুরী। তিনি বলেন, যারা কর্মসূত্রে বাইরে বের হন তারা অবশ্যই ঘরে ঢুকে গোসল করবেন, নিজের কাপড় নিজে ধুবেন।


মানবিক এ ডাক্তার নিজ গ্রাম কুমিল্লার গুণবতীতে প্রতিমাসের প্রথম শুক্রবার বিনামূল্যে চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন। এছাড়াও যেকোনো দিন অস্বচ্ছল রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাপত্র দেন। তিনি জানান, ২০১৬ সাল হতে মানবিক কাজগুলো করছেন।