বাংলাদেশের করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন, তাদের জন্য বেশ কয়েকটি সুবিধার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবন হতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রত্যক্ষভাবে যে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন, তাদের জন্য বিশেষ সম্মানির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।

এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় মাঠ পর্যায়ে যারা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছেন, তাদের জন্য বিশেষ বীমার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্য বীমা। মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটি পাঁচগুণ হবে।

স্বাস্থ্যবীমা ও জীবনবীমা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা।

চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবির সদস্য বা অন্য যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন তারা এই বীমার আওতায় থাকবে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ভাষণ দিয়ে থাকেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

এবারের সেই ভাষণেও তিনি শুভেচ্ছা জানালেও প্রাধান্য পেয়েছে করোনাভাইরাসের প্রসঙ্গ।

এর আগেই পহেলা বৈশাখের বহিরাঙ্গণের সকল অনুষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ''আমরা ঘরে বসেই এবারের নবর্ষের আনন্দ উপভোগ করবো। সবাইকে অনুরোধ করবো, মৌসুমী ফল সংগ্রহ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে বসেই নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করুন। আপনারা বিনা কারণে বাইরে যাবেন না।''

করোনাভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে বিশেষ সহায়তার ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ''দিনমজুর, রিক্সা বা ভ্যান চালক, মটর শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, পত্রিকার হকার ও হোটেল শ্রমিকসহ অন্যান্য পেশার মানুষ যারা দীর্ঘ ছুটি বা আংশিক লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়েছেন, তাদের নামের তালিকা ব্যাংক হিসাবসহ দ্রুত তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের হিসাবে সরাসরি অর্থ পাঠানো হবে। এই খাতে ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।"

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দিনমজুর, রিক্সা বা ভ্যান চালক, মটর শ্রমিক ও নির্মাণ শ্রমিক, পত্রিকার হকার, হোটেল শ্রমিকসহ অন্যান্য পেশার মানুষ যারা দীর্ঘ ছুটি বা আংশিক লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়েছেন, তাদের নামের তালিকা ব্যাংক হিসাবসহ দ্রুত তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তাদের হিসাবে এককালীন নগদ অর্থ সরাসরি পাঠানো হবে।

এই খাতে ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এছাড়া সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি, মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি, স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য বিনামূল্যে চাল ও গম বিতরণ ইত্যাদি পদক্ষেপ নেয়ার তথ্য জানান।

এর আগে ২৫শে মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলাওএকটা যুদ্ধ, যে যুদ্ধে মানুষের দায়িত্ব ঘরে থাকা। তিনি জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ''আপনারা যে যেখানে আছেন, সেখানেই অবস্থান করুন।''

সর্বশেষ ৫ই এপ্রিল করোনাভাইরাসের আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ৭২,৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

ছবিঃ ফোকাস বাংলা