টাকার অভাবে কাফনের কাপড় কেনা হচ্ছিল না। মরদেহ পরিবহন ও দাফনের খরচ যোগাতে দিশেহারা বাবা সাহাবউদ্দিন। অভাব আর মেয়ে হত্যার শোক যেন একত্রে জেঁকে ধরেছে দিনমজুর পিতাকে।


খবর পেয়ে আজ বেলা ১২টায় দশ হাজার টাকা হাতে দিয়ে নিহত তাহমিনার শরীয়ত নির্দেশনা পালনে পাশে দাঁড়ালেন বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও ফেনী জজ কোর্টের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু। তিনি জানান, কোনো টাকা নেই মানুষটির কাছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাদের সম্পর্কে জানি। এরা খুব দরিদ্র ও নিরীহ। সামাজিক দায়িত্ববোধের জায়গা হতে সহযোগিতা করেছি। কেউ না কেউ এগিয়ে আসতে হবে তাই আমি এগিয়ে এসেছি।


গতকাল ফেইসবুকে লাইভে স্বামী ওবায়দুল হক টুটুলের হাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয় তাহমিনা আক্তার। নিহতে বাবা ও বোন রেহানা আক্তারের বক্তব্য যৌতুকের জন্য খুন করা হয়েছে বোনকে। তাদের দাবী টুটুলের পরিবারের সবাই নির্যাতন করত তাহমিনাকে। টুটুলের পরিবারের দাবী, দাম্পত্য কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ড।


ইতোমধ্যে মামলার বাদী নিহতের বাবার পক্ষে বিনা খরচে আইনী সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এডভোকেট শাহজাহান সাজু। তিনি বলেন, এ নির্মম হত্যাযজ্ঞ আমাদের সবার বিবেককে নাড়া দিয়েছে। অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব।


তিনি বলেন, মামলা পরিচালনা করতে যে টাকার প্রয়োজন তা বহনে বাদীর সামর্থ্য নেই। টাকা নেই বলে মামলা চলবে না, এমন পরিস্থিতি এদেশে তৈরী হয়নি। একজন খুনীর সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে আইনজীবী হিসেবে যা যা করণীয় তার সবকিছুই আমি নিজ খরচে করবো।


২০১৯ সালে নৃশংস নুসরাত জাহান রাফী হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু কোনো পারিশ্রমিক ছাড়া মামলা লড়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, আদালত চলাকালীন নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের খাবার ও যাতায়াতের দায়িত্বও এ আইনজীবী নিজ উদ্যোগে বহন করতেন। এ মামলার সর্বোচ্চ শাস্তির রায় পাওয়া পর্যন্ত তিনি নিরলস কাজ করে গেছেন।


আজ দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাহমিনার লাশ চৌদ্দগ্রামের গুনবতীর আকদিয়া গ্রামের হাজী আমির উদ্দিন বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানে তার নামাযে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত তাহমিনার পিতা সাহাবউদ্দিন তা এডভোকেট শাহজাহান সাজুকে ফোনে জানান।