ফেনী শহরের মহিপালে সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা দিতে নির্মাণ করা হয়েছিল ফেনী ট্রমা সেন্টার। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও শৌচাগারসহ পানি সরবরাহ ব্যবস্থার অভাবে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল সেন্টারটি। আজ শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) প্রাণ ফিরে পেয়েছে সেটি।


গত একমাস ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর পরিশ্রমে সেটিকে সাজিয়ে গুছিয়ে ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সেন্টারটি পরিণত হয়েছে জেলার প্রথম করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল। হাসপাতালে সেবা দিতে যোগ দিয়েছেন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য-কর্মীরা। সাজানো হয়েছে শয্যা।


একইদিন জেলার প্রথম করোনা শনাক্ত রোগীকে চিকিৎসা দিতে সেখানে ভর্তি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলার প্রথম করোনা হাসপাতাল হিসেবে লড়তে প্রস্তুত ৩০ শয্যা বিশিষ্ট ট্রমা সেন্টারটি। আজ দায়িত্বপ্রাপ্তদের হাতে সেন্টারটির চাবি তুলে দেন সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন।


সিভিল সার্জন জানান, দেড়মাসের মধ্যে সেন্টারটিকে দাঁড় করাতে সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তারা, গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা, ফেনী জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারা সকলে মিলে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। সকলের পরিশ্রমের ফলেই আজ সেটিকে জেলার প্রথম করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে চালু করতে পেরেছি আমরা। ইতোমধ্যে জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। তাকে দিয়েই এ হাসপাতালের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হল।


একইদিন ফেনীর স্বেচ্ছাসেবী সমাজসেবী সংগঠন ‘সহায় ’ এর পক্ষ হতে হাসপাতালের রোগী, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক, সেবিকা, পরিচ্ছন্ন তাকর্মীদের জন্য পানির ফিল্টার, মিনারেল পানির বোতল, শুকনো খাবার প্রদান করা হয়। সংগঠনের সভাপতি মনজিলা মিমি সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেনের নিকট সেগুলো হস্তান্তর করেন।


এসময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া ও ডাঃ রিপন নাথ উপস্থিত ছিলেন। সহায়ের এ সহায়তার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সংগঠনকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সিভিল সার্জন।


করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফেনীতে সর্বাধিক সতর্কতার সাথে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলাব্যাপী করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১১০ শয্যার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে।


জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের পাশে ৩৫ শয্যার একটি ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ করা হয়েছে। এছাড়া মহিপালের ট্রমা সেন্টারে ৩০টি, মঙ্গলকান্দি হাসপাতালে ২০টি ও প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি করে ২৫টি বিশেষ শয্যার বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান সভাপতি করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এতে জেলা সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব এবং ফেনী জেনালের হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঞাকে প্রধান সমন্বয়ক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) ফেনীর ছাগলনাইয়াতে জেলার প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়। আজ শুক্রবার (১৭ এপিল) তাকে সেন্টারে ভর্তি করা হয়।