প্রথমদিকে করোনা রোগীর শনাক্তের হার ধীরগতি হলেও গত সপ্তাহ হতে ফেনীতে লাফিয়ে বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। একই সাথে আশংকাজনক হারে আক্রান্ত হচ্ছে ফেনীর স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। শুক্রবার পর্যন্ত ফেনীতে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩০ জন। তন্মধ্যে ৯জন স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল বলে নিশ্চিত করেছেন এমওসিএস ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ।


জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, আক্রান্ত কোভিড রোগীর মধ্যে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, একজন মেডিকেল অফিসার, ল্যাব টেকনিশিয়ান, দারোয়ান, আয়া ও ড্রাইভার রয়েছেন।


এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলের এক-তৃতীয়াংশই স্বাস্থ্যবিভাগের। যা জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য বড় ধরনের হুমকি বলে মনে করছেন ডাক্তার এবং সচেতন মানুষ।


ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এ মুহূর্তে ডাক্তারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের চিকিৎসার স্বার্থে ডাক্তারের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিকল্প নেই। ডাক্তারদের স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরঞ্জাম রয়েছে তবে তা অপ্রতুল, ল্যাব টেকনিশিয়ানও সংকট রয়েছে।


বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব বলেন, আমাদের প্রয়োজনে ডাক্তারের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জরুরী। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনের অধিকহারে সংক্রমণ আমাদের শংকিত করছে। তিনি বলেন, কোভিড রোগীর চিকিৎসায় স্বাস্থ্য কর্মীদের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে সবচেয়ে জরুরী মানসম্মত সরঞ্জাম। যেকোনো মুল্যে তা নিশ্চিত করতে হবে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথমদিকে যেসব সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত মানের ছিল না। এখন যেগুলো রয়েছে তা মানসম্মত হলেও পরিমানে খুবই অপ্রতুল। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেসব স্বাস্থ্য সরঞ্জাম উপহার দিয়েছে তার বেশীরভাগ খুবই নিম্নমানের।


ডাক্তারদের ঝুঁকি প্রসঙ্গে বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি ডাঃ সাহেদুল ইসলাম কাওসার বলেন, সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরা সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে- এর কোন বিকল্প নেই। ইতোমধ্যেই সামাজিক সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে। কে আক্রান্ত -কে আক্রান্ত নয় বুঝা মুশকিল। অনেক রোগীই ভয়ে/ সামাজিক হয়রানী থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের কাছে ইতিহাস গোপন করেন। এর মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর পর্যাপ্ততা ও গুনগত মানের একটি চ্যালেঞ্জ তো আছেই। সব মিলিয়ে চিকিৎসক -স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশী থেকেই যাচ্ছে এবং যথারীতি আক্রান্ত হচ্ছেন।