সোনাগাজীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক সপ্তাহের ভেতরে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মৃত একজনের নমুনায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া গেছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক যুবক ও এক বৃদ্ধ। তাদের একজন ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও অপরজন ৩০ বছর বয়সী এক যুবক।


আজ বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম হতে ফেনীর সোনাগাজীতে ফেরার আটদিন পরে দাউদুল ইসলাম সবুজ (২৮) নামে এক যুবক মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বিকালে উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে জ্বর-কাশি উপসর্গ নিয়ে মারা যায় ওই যুবক। সে চট্টগ্রামের একটি কারখানায় কাজ করত বলে স্থানীয়রা জানায়।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন জানান, অসুস্থতা নিয়ে সে বাড়ি ফিরেছিল। এর জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হতে সে চিকিৎসাও নিয়েছিল। বাড়ি বাড়ি আসার পর তার অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। আজ বিকালে সে মারা যায়। তার মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ওই মৃত যুবকের নমুনা সংগ্রহ করেছে।


এর আগে গত রবিবার সকালে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টে ভুগে সোনাগাজীর চর মজলিশপুর ইউনিয়নের চান্দলা এলাকায় এক মসজিদের ইমামের (৭৫) মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর ওই ব্যক্তির করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য সংগৃহীত নমুনার ফল পজিটিভ এসেছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ উৎপল দাস।


তিনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই মৃত ব্যক্তির নমুনার ফলাফল জানা গেছে। সেটি পজিটিভ।


মৃতের স্বজনরা জানায়, মৃত্যুর কিছুৃদিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলেও গত শনিবার রাত থেকে হঠাৎ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এরপর দিন তিনি মারা যান। একই দিন বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থায় তার লাশ জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


এর আগে গত ১০ মে উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মজুপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডর দীর্ঘদিন লিভার ক্যান্সার, ডায়াবেটিস রোগে ভুগে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হলে গত ১৬ মে প্রাপ্ত ফলাফলে সেটি পজেটিভ আসে।


স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, আজ পর্যন্ত ফেনীতে মোট শনাক্তকৃত ৮৯ জনের মধ্যে ১১জন সোনাগাজীর। তাদের মধ্যে দুইজন চিকিৎসকও রয়েছেন। এদের মধ্যে এক স্বাস্থ্যকর্মীসহ দুইজনের মৃত্যুর পর করোনা পজিটিভ এসেছে। আর পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তদের বাড়িতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।


এদের মধ্যে ফেনী সদরের ২৯ জন, ছাগলনাইয়ায় ১৪ জন, দাগভূঞায় ১৯ জন, সোনাগাজীতে ১১ জন, ফুলগাজীতে ৫ জন, পরশুরামে ৭ জন ও ফেনী জেলার বাইরের ৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৩ জন সুস্থ ও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২৯ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন বলে সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান।