একদিনের ব্যবধানে ফেনীতে নতুন করে আরও ১৮ ব্যক্তির দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ১২জনই সদরের বাসিন্দা, আর বাকী ৬জন ছাগলাইনাইয়ার বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন।


এর মধ্যে ৩ বছর বয়সী এক শিশুও রয়েছে। আজ শনিবার (৩০ মে) নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৮টি পজিটিভ এসেছে। নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ১৪ পুরুষ ও ৪জন নারী রয়েছেন। তাদের বয়স ৩ হতে ৮০ বছরের মধ্যে বলে জানান সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সমন্বয়ক ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ।


পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেনী সদরে করোনার বিস্ফোরণ ঘটেছে। গত দুইদিনে ফেনী সদরে ৩০জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত ১৫৪ রোগীর মধ্যে ৫৯ জনই ফেনী সদরের। শতাংশের হিসেবে শনাক্তের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ। আক্রান্তদের মাঝে রয়েছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সরকারী কর্মকর্তা, ট্রাফিক পুলিশ, ব্যাংক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, বৃদ্ধ, যুবক, শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ।


সূত্র জানায়, শহর জুড়ে বিস্তার লাভ করেছে করোনা ভাইরাস। ফেনী শহরের লাইফ লাইন খ্যাত মাষ্টারপাড়া, ডাক্তারপাড়া, মিজান রোড, নাজির রোড, উকিল পাড়া, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, রামপুর, হাজারী রোড, শান্তি কোম্পানী রোড, কদলগাজী রোড, বারাহীপুর সবখানেই করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ফেনী সদরের ফরহাদনগর, ধর্মপুর, শর্শদী  লেমুয়া ইউনিয়নে পাওয়া গেছে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। আজকে শনাক্তকৃতদের মধ্যে ৯জনই ডাক্তারপাড়ার বাসিন্দা। এর মধ্যে একই পরিবারের ৬ সদস্য রয়েছেন।


গতকাল শুক্রবার (২৯ মে) দুই ধাপে ফেনীতে রেকর্ড সংখ্যক ৪৭জন করোনার আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড গড়ে ফেনীতে শতক পার করে করোনা রোগীর সংখ্যা। এ নিয়ে গত দুইদিনে ফেনীতে ৬৫জন রোগী শনাক্ত করা হল।

অন্যদিকে ছাগলাইনাইয়া নতুন শনাক্তকৃত ৬জনই পৌর এলাকার বাসিন্দা। এর রয়েছেন স্বাস্খ্যকর্মীসহ নানা বয়সী মানুষ।


স্বাস্থ্য বিভাগের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলা। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ৩৭জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে ছাগলনাইয়ায় ২১জন, সোনাগাজীতে ১৯জন, পরশুরামে ৭জন ও ফুলগাজীতে ৬জন। এছাড়া আরও ৫জন রয়েছেন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা, ফেনীতে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।


সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৫ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ফেনী সদরে ২০ জন, সোনাগাজীতে ৬ জন , ছাগলনাইয়ায় ১৩ জন, দাগনভূঞায় ৮ জন, পরশুরামে ৪ জন ও ফুলগাজীতে ৪ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৩ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩জন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ফেনীতে চলতি মে মাসেই ১৪৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে সংক্রমণ শনাক্তের হারের উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে।