আজ মঙ্গলবার (১৬ জুন) ফেনীতে করোনা শনাক্তের ২ মাস পূর্ন হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত করা হলেও প্রথম মাসে অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল-১৬ মে পর্যন্ত শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩০জন। আর ১৭মে হতে আজ ১৬জুন মঙ্গলবার পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে ৫৩৩জন রোগী। আর চলতি সপ্তাহের গত ৫ দিনেই শনাক্ত করা হয়েছে মোট ১৯৩ জন রোগী। সে হিসেবে প্রথম মাসের তুলনায় ফেনীতে করোনা শনাক্তের দ্বিতীয় মাসে হার বেড়েছে প্রায় ২০গুণ।

দিনের ব্যবধানে ফেনীতে নতুন করে আরও ৪৯ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁিড়য়েছে ৫৬৩ জনে। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট ১১জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গতকাল নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এ ফেনীর ১৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৫০টি নমুনা পজিটিভ পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১টি ২য় নমুনা। নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে ফেনী সদরে ২৫ জন, সোনাগাজীতে ১৩ জন, দাগনভূঞায় ৮জন, ফুলগাজী ২ জন ও পরশুরামে ৪ জন রয়েছে।

সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। এছাড়া পুলিশ সদস্যও রয়েছেন শনাক্তের তালিকা রয়েছেন। তারা ফেনী সদরের।

দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম জানান, উপজেলায় নতুন শনাক্তকৃত ৮জনের মধ্যে ৪জন পৌরসভার, ৩ জন মাতুভূঞা ও একজন জায়লস্কর ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮জন। আর সুস্থ হয়েছেন ২৬জন।
অপরদিকে সোনাগাজীর নতুন শনাক্তকৃত ১৩জনের মধ্যে ৭জন নবাবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। বাকীরা সদর, মতিগঞ্জ ও চারচান্দিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এবিএম মোজাম্মেল হক জানান, নতুন শনাক্তকৃত ২জনসহ উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ জন। আক্রান্তরা নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৬জন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে সদরে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে ২০৭জন। শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে জেলায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলায়। উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ১২৮ জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ৯৭জন, ছাগলনাইয়ায় ৬৩জন, পরশুরামে ২৮জন ও ফুলগাজীতে ৩১জন। এছাড়া আরও ৮জন রয়েছেন ফেনী জেলার বাইরের বাসিন্দা, ফেনীতে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বর্তমানে ১৮ জন করোনা রোগী ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১০জনকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২১জন।

অন্যদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মোট ১১জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৬জন রয়েছেন সোনাগাজীর, ২জন করে ৪জন ফেনী সদর ও দাগনভূঞার আর ছাগলনাইয়া উপজেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ আর ২জন নারী।

সূত্র আরও জানায়, এ পর্যন্ত সংগৃহীত মোট ৪ হাজার ২২টি নমুনার মধ্যে মধ্যে ২ হাজার ৯৯৯টি নমুনার ফল পাওয়া গেছে। আজ নতুন করে পরীক্ষার জন্য আরও ২২১টি নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে।

১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর আগে শনিবার (১৩ জুন) ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৫জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়।

শনাক্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ।