গত ১৩ জুন করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকায় মারা গিয়েছিলেন সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের কানাই কোয়ালল বাড়ির বেলায়েত হোসেন বিলাত (৫৪) নামে এক সরকারি চাকুরিজীবী। তার পরিবারের লোকজন এলাকায় এনে তার গোপনে মরদেহ দাফন করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তার মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করে গত ১৪ জুন পরীক্ষার জন্য নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ল্যাবে প্রেরণ করে।

মাঝখানে ৫দিন ল্যাবে কিট না থাকায় বন্ধ ছিল পরীক্ষা। গতকাল বুধবার ফেনীর আরও ৩৯২টি নুমনার মধ্যে তার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার মৃত্যুর ১৩ দিন পর প্রাপ্ত আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) প্রাপ্ত ফলাফলে জানা গেলে সেটি পজিটিভ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির জানান, গত ১৩ জুন শ্বাসকষ্ট নিয়ে বেলায়েত হোসেন ঢাকার খিলগাঁও এলাকার একটি বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে পরিবারের লোজকজন তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে গোপনে দাফনের চেষ্টা করে। বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অবগত হলে তার মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে তড়িঘড়ি করে তার পরিবারের লোকজন সরকারি নির্দেশনা না মেনেই তার লাশ দাফন করেছিল।

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডাঃ উৎপল দাশ জানান, মৃত্যুর পর সোনাগাজীতে আনা হলে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নোয়াখালীর আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজ ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছিল। আজ তার ফলাফল পেয়েছি। সেটি পজিটিভ এসেছে।
করোনায় মৃত ব্যক্তির শরীর হতে জীবাণুর কার্যকারিতা ৩ ঘন্টার কথা সারা বিশ্বে স্বীকৃত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য সামনে এনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একই তথ্য প্রচার করেছে।

গত ৩ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন সম্পর্কে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির শরীরে ৩ ঘণ্টা পর আর ভাইরাসের কার্যকারিতা থাকে না।

কিন্তু এক্ষেত্রে বেলায়েত হোসেনের মৃত্যুর ৭/৮ ঘন্টা পরে সংগৃহীত নমুনা ১২দিন পরে করা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। বিষয়টি মৃত্যুর পর করোনার কার্যকারিতা নিয়ে ভাবাচ্ছে সকলকে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, ফেনীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও ২ জন নারী রয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৮ জন সোনাগাজীর, ৩ জন দাগনভূঞার, ২ জন করে ফেনী সদর ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বাসিন্দা।