করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়ে আইসোলেশনের বেড়াজাল ছিন্ন করে গতকাল বুধবার মূল দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন আট ক্রিকেটার। মূলত আইসোলেশন থেকে ফেরা ব্যাটসম্যান-বোলাররাই এদিন সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং, বোলিং করেছেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, হাসান মাহমুদ, খালেদ আহমেদদের বোলিং সেশনটা পর্যবেক্ষণ করেছেন বোলিং ওটিস গিবসন।

২০ সেপ্টেম্বর ‘বাবল’ এর মধ্যে ক্যাম্প শুরু হলেও সাইফ উদ্দিন গতকাল যোগ দিতে পেরেছেন। ঢাকার বাইরের যারা এসে টেস্ট করানোর পর আইসোলেশনে ছিলেন তাদের একজন তিনি। ২২টি ওয়ানডে ও ১৫টি টি-টোয়েন্টি খেলা সাইফ বাংলাদেশের একাদশ পরিকল্পনায় খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন। একজন পেস অলরাউন্ডারের খোঁজ বহুদিনের। কিন্তু সন্ধান মেলে না। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ২০১৭ সালে আগমন হলেও এখনো সাইফ উদ্দিনের খেলা ম্যাচের সংখ্যা কম। গত বিশ্বকাপের পর পিঠের ইনজুরির কারণে লম্বা সময় মাঠের বাইরে কেটেছে। এরপর ফিরে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ২টি ওয়ানডে খেললেন। তারপর তো করোনা ঘরে বসিয়ে দিল সবাইকে।

অনুশীলনে পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের পরামর্শ শুনছেন সাইফউদ্দিন

সাদা বলের দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অপরিহার্য সদস্য এখন ফেনীর ছেলে সাইফউদ্দিন। প্রথম বার টেস্ট দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়ে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত এই তরুণ অলরাউন্ডার। এবার লাল বলেও নিজের সেরাটা দেখাতে চান তিনি।

করোনাকালে পুরো সময় ফেনীতে ছিলেন সাইফউদ্দিন। নিজের এলাকায় ফিটনেস, ব্যাটিং, বোলিংয়ের কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নন নিজেই। ছয়-সাত মাস পর মিরপুরে পুরোদমে অনুশীলন করে স্বস্তিতে এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।

গতকাল সাইফউদ্দিন বলছিলেন, ‘ছয়-সাত মাস পর দলের সঙ্গে মিরপুর গ্রাউন্ডে, খুবই আনন্দিত আমি। প্রথম বারের মতো সেন্টার উইকেটে বল করতে পেরে উচ্ছ্বসিত।’

পুরোদমে অনুশীলনে যোগ দিয়ে নিজেকে ফিট করতে চান সাইফ

সবার মতো সাইফউদ্দিনেরও স্বপ্ন বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট খেলা। সাদা পোশাকে নিজের সেরাটা নিংড়ে দিতে চান তিনি। 

টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার রোমাঞ্চ ছুঁয়ে যাচ্ছে এই তরুণকে। বলেছেন, ‘যেহেতু আমি প্রথম বারের মতো টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি। খুবই আনন্দিত আমি, চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দেওয়ার এবং যতটুকু পারি শেখার। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে টেস্ট ক্রিকেট খেলা, আমিও ব্যতিক্রম নই। চেষ্টা থাকবে সুযোগ পেলে ভালো কিছু করা।’ সাদা পোশাকের ক্রিকেটে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় বেশ ভালোভাবেই আছেন সাইফউদ্দিন। এই ফরম্যাটে তার মতো কার্যকর অলরাউন্ডারই খুঁজছেন নির্বাচক, কোচরা। লঙ্কা সফরে ২৩ বছর বয়সি এই ক্রিকেটারের টেস্ট অভিষেক হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

করোনায় বড় বিরতি পড়েছে, অনুশীলনেও উদ্দ্যম ছিল না। নিজের স্কিল নিয়ে কিছুটা চিন্তিত সাইফউদ্দিন। গতকাল বলেছেন, ‘আমার এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য নিজেকে ফিট করা, স্কিল উন্নতি করা। আমি কিছুটা চিন্তিত আমার স্কিল নিয়ে। প্রায় ছয়-সাত মাস আমি বোলিং, ব্যাটিং সেভাবে করতে পারিনি।’ তবে কয়েক দিন ধারাবাহিকভাবে অনুশীলন করে এই অস্বস্তি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশাবাদী এই তরুণ অলরাউন্ডার।

সাইফউদ্দিন মনে করেন, করোনা বিরতি তাঁকে আগের চেয়েও মানসিকভাবে বেশি শক্ত করেছে, ‘অনেক সময় কাজ করতে মন চাইত না। তারপরও নিজেকে জোর করেছি, উদ্বুদ্ধ করেছি পারছি না, করছি। এসব নিজে নিজে যখন করেছি তখন মনে হয়েছে আমার উন্নতি হয়েছে এবং আরও উন্নতি করতে হবে। এ জিনিসগুলো এই সময়টাতেই উন্নতি করেছি।’