ক্ষুদ্র জুয়াড়িরা মাঠে থাকলেও অনলাইনে লেনদেন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে অনলাইন জুয়াড়িরা। আইপিএলে ক্রিকেট ম্যাচ ঘিরে আন্তর্জাতিক জুয়াড়িদের পাশাপাশি ফেনীতে স্থানীয় পর্যায়ে যুবকরা সম্পৃক্ত হয়েছে বেট ৩৬৫ নামক লন্ডন ভিত্তিক জুয়ার ওয়েবসাইটে। তবে সপ্তাহখানেক ধরে কমিশন নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় ওয়েবসাইটটি ব্যবসা বন্ধ রেখেছে অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান নেটলার ও স্কিলের সাথে। ফলে বন্ধ রয়েছে অনলাইনকে ঘিরে বিশাল অংকের জুয়ার বাণিজ্য। এ তথ্য সরবরাহকারী নিজেই একসময় অনলাইন বাজিতে সক্রিয় থাকলেও আর্থিক ক্ষতির কারণে এখন আগ্রহ হারিয়েছেন।

তার দেয়া তথ্য মতে, ফেনীতে আইপিএল ঘিরে জুয়ায় খেলায় যুক্ত রয়েছে প্রায় ১০ হাজারের বেশি তরুণ। যাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ফেনীর বাইরে পড়ছে বড় একটি অংশ। জুয়া খেলতে কি পরিমাণ টাকা লগ্নি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার কোন নির্দিষ্টতা নেই। তার ধারণা মতে টাকার অংকের পরিমাণ অকল্পনীয়।

অনলাইনে জুয়া খেলায় ব্যাঘাত ঘটলেও বন্ধ নেই স্থানীয় পর্যায়ে ছোটখাট বাজি ধরা। আইপিএল ম্যাচ শুরু হলেই ফেনীর বিভিন্ন মার্কেট ও বাজারের দোকান কর্মচারীরা আইপিএল নিয়ে ছোটখাট জুয়ায় মেতে ওঠে। প্রতি বল, ওভার, কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে, কোন বোলার কয়টা উইকেট নেবে- এমন অনেক বিষয় নিয়ে বাজি ধরা হয়। সাধারণত জুয়ার খেলোয়াড়রা দুইভাবে বাজি ধরে থাকে। ফেনী বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়, অলিগলিতে, কিশোর-তরুণরা দলবদ্ধ হয়ে দোকান, সেলুন, হোটেল বা ঘরে বসে জুয়া খেলে। এরা বাজির টাকা নগদ পরিশোধ করে। অন্যরা বাসা বা অন্যত্র বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচিতদের সঙ্গে বাজি ধরে। জুয়ার টাকার পরিমাণ ২০ টাকা ৫ হাজার টাকার বেশি পর্যন্ত হয়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ফেনীর একটি প্রতিষ্ঠানের ১৩জন কর্মচারী এক সাথে মেতে ওঠেন জুয়া খেলায়। রিয়াজ নামে তাদেরই একজন জানান, এ মাসের বেতনের ১০ শতাংশ পরিবারের জন্য খরচ করতে পারিনি। অধিকাংশই জুয়া খেলায় ব্যয় হয়েছে।

ফেনীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র রবিন (ছদ্মনাম)। পাড়ার বড় ভাইদের দেখাদেখি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ ঘিরে চলা জুয়ার ব্যাপারে কৌতুহলী হয়ে পড়ে সে। একদনি কৌতুহল মেটাতে বড় ভাইদের সাহায্য নিয়ে সেও নাম লিখায় অনলাইন জুয়ার খাতায়। প্রথমে ছোটখাট অংকের বাজি ধরলেও ক্রমেই বাড়তে থাকে টাকার পরিমাণ।