বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসার বৈধতার লাইসেন্স ও অনুমোদন প্রাপ্তিতে সহজিকরণ দাবি জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। একই সভায় স্বাস্থ্যখাতে পর্যবেক্ষণে সরাসরি স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন আলোচকরা।

আজ ২৪ অক্টোবর (শনিবার) দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন সেন্টারে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ ফরিদ হোসেন মিঞা।

প্রধান অতিথি বলেন, সরকারি অনুমোদনের জন্য এখন আর অধিদপ্তরে ঘোরাঘুরি করতে হয় না। অনলাইনে আবেদন করে তা পাওয়া সম্ভব। অনেকে যথাযথ তথ্য প্রদান করেন না তাই অনুমোদন ঝুলে যায়।

তিনি জানান, ফেনীতে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক, ব্লাড ব্যাংকসহ ১৪৪টি আবেদিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কারণে ঝুলে আছে ৪৯টি, অপেক্ষমান ২২, তদন্ত হয়েছে ৭টি এবং অসম্পূর্ণ আবেদন রয়েছে ৩৬টি।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় ফেনীর স্বাস্থ্যখাত সুবিধাজনক পর্যায়ে রয়েছে। তবে টেকনোলজিস্ট সংকট রয়েছে সরকারি হাসপাতালসহ বেসরকারি খাতেও। তিনি জানান, এ সংকট দেশের সর্বত্র।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের বেসরকারি খাতকে পর্যবেক্ষণের মূল দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে থাকতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা একটি পর্যবেক্ষণ বিভাগ করে তদারকি করা যেতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতও মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে যাচ্ছে। তবে সরকারের বিধিবদ্ধ নিয়ম মেনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেনী বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ সাহেদুল ইসলাম কাওসার করোনাকালে ফেনীর সক্ষমতা প্রসঙ্গে বলেন, ফেনীর সকল উপজেলায় সরকারি-বেসরকারিভাবে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এতে করোনা রোগীর চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়েছে।

বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের সরকারি বিধিবিধান মেনে চলা বাঞ্ছনীয়। বক্তব্যে তিনি লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণসহ লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ করার অনুরোধ জানান।

ফেনী জেলা প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি মোহাম্মদ হারুন উর রশিদ দাবী জানান, সরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে তাৎক্ষণিক জরিমানা না করে তদন্ত সাপেক্ষে করা উচিত। স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশের ছাড়পত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র দ্রুত ছাড়ে জেলা কার্যালয় প্রধানদের অনুরোধ জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজী।

সভায় ফেনীতে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ওপর পর্যবেক্ষণমূলক একটি স্লাইড উপস্থাপনা করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ।

ভোক্তা অধিকার আইনের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন ধারা প্রসঙ্গে উপস্থাপনা তুলে ধরেন অধিদপ্তরের ফেনী কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সোহেল চাকমা।

ফেনী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে ও ফেনী জেলা প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স এসোসিয়েশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-পরিচালক সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ দেওয়ান মোঃ মেহেদি হাসান, ডাঃ রৌশন জাহান আক্তার, সাংবাদিক মোঃ শাহাদাত হোসেন, জাহেদুল ইসলাম ফয়সাল।