ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামে গৃহহীন দুই পরিবারকে ঘর করে দিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। তার দেয়া আধা পাকা ঘর পেয়ে বৃদ্ধা লুৎফের নেছা ও প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমান আর গৃহহীন রইলেন না। ঘর না থাকায় তাদের দীর্ঘদিনের দুর্দশা ঘুচল। মিলল মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাদের ঘরে এখন বইছে আনন্দের বন্যা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ অনুযায়ী নিজ এলাকার এ দুই অস্বচ্ছল পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছেন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। আজ শনিবার (২১ নভেম্বর) সকালে ওই দুই পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছেন তিনি। এসময় ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আফতাবুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চাবি হস্তান্তরকালে নৌপরিবহন সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে মুজিবশতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখার প্রয়াসে সরকারের প্রত্যেক সচিব সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দু’টি পরিবারকে পূনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসেবে আমার নিজ এলাকা ধলিয়া ইউনিয়নের দুই পরিবারকে ঘর করে দেয়া হয়েছে। সচিব জানান, জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিয়মিত তদারকি ও সহযোগিতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘরগুলো নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ঘর না থাকায় বৃদ্ধা লুৎফের নেছা ও প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমান মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। ঘর করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করা হয়েছিল। সচিব মহোদয়ের নির্দেশে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। নাসরীন সুলতানা জানান, প্রতিটি ঘরে ২টি শোবার ঘর, ১টি রান্নাঘর, ১টি শৌচাগার ও সামনে খোলা বারান্দা রয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, দুটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। নৌপরিবহন সচিবের ব্যক্তিগত তহবিল হতে এ ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছে।

তিন ছেলে আর নাতি-নাতনিদের নিয়ে জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে বসবাস করতেন অসুস্থ বৃদ্ধা লুৎফের নেছা। ঘর পেয়ে তার সেই দুর্দশার অবসান হয়েছে বলে জানান তিনি। জীবনের শেষ মুহুর্তে ভালোভাবে থাকার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত এই বৃদ্ধা। লুৎফের নেছা বলেন, সচিব স্যারের অনুগ্রহে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। আমি কখনো কল্পনা করিনি এমন ঘরে থাকতে পারবো। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ও সচিবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

অপর উপকারভোগী প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমান বলেন, প্যারালাইজড হয়ে গত দশ বছর মানবেতর জীবনযাপন করছি। বহুকষ্টে ছোট্ট একটি ঘরে তিন কন্যা, স্ত্রী ও বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে নিয়ে থাকতাম। এই বসতঘর পেয়ে আমি চির কৃতজ্ঞ।