ফেনীর ছাগলনাইয়া শুভপুর ইউনিয়নের জয়চাঁদপুর এলাকা ভূমি অফিসের পাশে প্রায় শত বছর যাবত পরিবারগুলোর বসবাস। সরকারী ওই অফিসের পাশ দিয়েই চলাচলের একমাত্র পথ। সেই পথটি এখন রুদ্ধ হতে চলেছে, ভূমি অফিস নির্মাণ করছে সীমানা প্রাচীর।

উপায়ান্তর না দেখে গ্রামের ৬৫টি পরিবার ঘুরছে প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) আসেন জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামানের কাছে।

চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখার দাবীতে ফেনী জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন অসহায় ৬৫ পরিবারের প্রতিনিধিরা। এসময় তারা বলেন, একজন মানুষ মারা গেলে তার লাশ নেয়ার রাস্তাটাও তাদের নেই, কোন গর্ভবতী মহিলাকে ডাক্তারের কাছে নেয়ার রাস্তাটাও তাদের থাকবেনা। রাস্তার অভাবে তাদের ধুঁকে ধঁকে মরতে হবে।

স্মারকলিপিতে গ্রামবাসী উল্লেখ করেন, শুভপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পশ্চিম ও উত্তর পাশে জয়চাঁদপুর গ্রামের ২নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় একশ বছর ধরে ৬৫ পরিবারের ৩ শতাধিক মানুষের বসবাস। এলাকাবাসী মূল সড়কে উঠার জন্য চলাচলের ক্ষেত্রে শুভপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কিছু জায়গার উপর দিয়ে গড়ে উঠা সড়ক দিয়ে যেতে হয়।

সম্প্রতি উপজেলা ভূমি অফিস সরকারী সম্পত্তির বে-দখল ও নিরাপত্তার স্বার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। সীমানা প্রাচীর ও তারকাঁটার বেড়া নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর চলাচলের রাস্তা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।

গ্রামবাসীরা আরও জানায়, চলাচলের বিকল্প রাস্তা না থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দেখা দেয়। এর আগে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) নিকট তাদের চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখার জন্য লিখিত আবেদন করা হয়েছিলো তাতে বরফ গলেনি। শেষ চেষ্টা হিসেবে তারা এসেছেন জেলা প্রশাসকের কাছে।

স্মারকলিপি প্রদানকালে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ইয়াসিন শরীফ ভূঞাঁ, মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, আবুল কাদের, এমইউ জাহাঙ্গীর, ও মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি উন্মুক্ত রাখার দাবী জানিয়ে তারা বলেন, প্রায় একশ বছর ধরে আমরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছি। এখন সরকার আমাদের চলার পথ বন্ধ করে দিলে আমরা কোথায় যাব। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে মানবিক দিক বিবেচনা করে চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখার জন্য সহনুভূতি কামনা করেছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামান বলেন, সরকারী জায়গা সরকার ইচ্ছে করলেই সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে পারে। সংরক্ষনেরর জন্য যেকোনো দরনের পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করতে পারে। সরকারী জায়গা সরকার না চাইলে সাধারণ মানুষ এভাবে ব্যবহার করার নিয়ম নেই।