ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা ফেনী সদরের ধর্মপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম আজহারুল হক আরজুর মৃত্যুতে ফেনী জুড়ে বিরাজ করছে শূন্যতা। তার এ আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ঝড় বইছে ফেনীর রাজনৈতিক, সামাজিক অঙ্গনে। দলমত নির্বিশেষে শোক জানাচ্ছেন ফেনীর আলোচিত এ আওয়ামী লীগ নেতার প্রতি।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাংসদ লে: জেনারেল (অব): মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তারা মরহুমের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

শোক প্রকাশ করেছেন ফেনীর সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন হাজারীও।

শোক জানিয়েছে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক আজ আরজুময়। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
শোক প্রকাশ করেছেন ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী লিপটন, পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

জহির উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী লিপটন তার ফেইসবুকে লিখেন, জেলা আওয়ামীলীগ এর সাবেক সদস্য মুজিব রনাঙ্গনের বীর সেনানী ৯০ এরশাদ ৯৬ খালেদা নিজামী জোট বিরোধী আন্দোলনের অগ্র সেনানী আজহারুল হক আরজু ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে শোক জানানোর ভাষা শক্তি হারিয়ে ফেলেছি।

তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিক বখতেয়ার মুন্না ফেইসবুকে লিখেন, আমি কোন পক্ষ বিপক্ষ বুঝিনা। বুঝি একটাই স্বৈরচার এরশাদের বন্দুকের নলের মুখে থাকা আমার জীবন যুদ্ধের সহযোদ্ধাদের আমি কখনও ভুলতে পারিনি পারবোও না। তাদের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হলেও ভালোবাসার সম্পর্ক তো আর ছিন্ন হয়নি। অকালে অবেলায় একগুয়ে আপোষহীন আরজুর চলে যাওয়া মেনে নেয়া বড় কঠিন।

সাবেক সাংসদ হাজী রহিম উল্লাহ শোক প্রকাশ করে লিখেন, এম আজহারুল হক আরজু জামাত বিএনপি জোট সরকারের সময় ফেনীতে সফল রাজপথ কাপানো নেতা ছিলেন। নিজ দলীয় সরকারের সময় স্বদলীয় প্রতিপক্ষের চরম হেনস্তার শিকার হয়ে অনেক বার জেল খেটেছিলেন। অথচ এক সময় আরজুদের শ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত আজকের ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ।

অপ্রত্যাশিত এ মৃত্যু ফেনীর অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বলছেন বিতর্কিত বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। আরজু মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তিনিও।

এডভোকেট শাহজাহান সাজু লিখেন, দীর্ঘদিনের এই সহযোদ্ধার আকস্মিক মৃত্যুতে গভীরভাবে ব্যাথিত, মর্মাহত, শোকাহত।

আজ শুক্রবার (৫ মার্চ) ভোর টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সদস্য আরজু। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। ২০১৯ সালে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচন করেছিলেন তিনি। 

দুপুরের দিকে তার লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সটি ধর্মপুরে এলে  হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরিবার, স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মী, শুভাকাঙ্খীদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে ধর্মপুরের বাতাস। তাকে শেষবারের মত এক নজর দেখতে মানুষের ভিড় নামে ধর্মপুর ইউনিয়নের জোয়ার কাছাড় গ্রামে। আজ বিকাল ৫টায় ইউনিয়নের বটুয়া দিঘীর পাড় ঈদ গা ময়দানে নামাজে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।