সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী ফেনীতে মোট ভোটারের মধ্যে অর্ধেকের বেশি হচ্ছে তরুণ ভোটার। জেলা নির্বাচন অফিস হতে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ফেনীতে ১২ লাখ ৯১ হাজার ৬৪০ জন মোট ভোটারদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৭ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৮ জন। যা জেলার মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্যমতে, ফেনীতে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম চলছে। চলতি হালনাগাদ কার্যক্রম শেষে তরুণ ভোটারদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, যারা আগামী সংসদ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলাব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগের হালনাগাদ অনুযায়ী জেলায় তরুণ ভোটার সংখ্যাই বেশি। ইতোমধ্যে ৩ উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও বায়োমেট্রিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ হলে এ তরুণ ভোটারদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ জেলায় তরুণদের ভোটার হওয়ার আগ্রহ অনেক বেশি। তিনি বলেন, ভোটার হওয়া চলমান প্রক্রিয়া। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ অব্দি এ কার্যক্রম চলবে। তখনকার তালিকা অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৭৩ হাজার ৩০৬ জন। এরমধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৪৩ হাজার ৫৮৭ জন, মহিলার সংখ্যা ২৯ হাজার ৭১৯ জন। ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮৭ জন। এরমধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৭০ হাজার ৬৩৬ জন, মহিলার সংখ্যা ৫১ হাজার ৭৫০ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ জন। ২৬ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ১৬৮ জন। এরমধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৭২৬ জন, মহিলার সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৪০ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন। ৩০ থেকে ৩৩ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৬৩৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৫১৬ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৫৭ হাজার ১১৮ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ জন।৩৪ থেকে ৩৭ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৫৯ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭১৩ জন।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, চলমান হালনাগাদ কার্যক্রম শেষে জেলায় তরুণ ভোটারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতৃত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে তরুণরাই বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।
আলমগীর হোসেন নামে একজন ভোটার বলেন, জেলায় তরুণ ভোটার সবচাইতে বেশি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে যদি ভোট হয়, তবে তরুণদের সবাই ভোট দিলে তাহলে পরিবর্তন ঘটতে পারে। তরুণদের ভাবনা না বুঝতে পারলে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিপদে পড়তে পারে।
রিহান আহমেদ একাদশ শ্রেণির এক তরুণ ভোটার বলেন, গত নির্বাচনেও ভোট দিতে পারিনি। এবার আমি ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি। তরুণদের নেতৃত্বে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি, আগামী নির্বাচনে আমরা তরুণরাই আমাদের সংসদ নেতা নির্বাচন করব।
অন্যদিকে জেলায় ৩৮ থেকে ৪১ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৭২৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৫ হাজার ৪২৮ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৫৮ হাজার ২৯৮ জন। ৪২ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৫৪৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৪ জন, মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৫৪২ জন। ৪৬ থেকে ৪৯ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৯১ হাজার ৬৯৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৭৭ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪০ হাজার ৯১৮ জন। ৫০ থেকে ৫৩ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৭৬ হাজার ৮৩১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৪১ হাজার ৫৮৬ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩৫ হাজার ২৪৫ জন।৫৪ থেকে ৫৭ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৭৫ হাজার ৭৫০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৩৯৩ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৩৫৭ জন। ৫৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৮০১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২১ হাজার ৬২১ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১৭ হাজার ১৮০ জন। এছাড়াও জেলায় ৬০ বছরের অধিক ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ জন।এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৬ হাজার ৩৭৮ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ১ হাজার ৯২২ জন।
নির্বাচন অফিস সূত্র আরও জানায়, ফেনী সদর উপজেলায় বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৭৯ জন। দাগনভূঞা উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৪০ জন। সোনাগাজী উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৫ জন। পরশুরাম উপজেলায় মোট ভোটার ৯২ হাজার ৪০০ জন। ফুলগাজী উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৮ হাজার ১৩৬ জন। ছাগলনাইয়া উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১০ জন।
অন্যদিকে সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী জেলার ৩টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ফেনী-১ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৬১ জন। এরমধ্যে ছাগলনাইয়া উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭২ হাজার ৪০২ জন। ফুলগাজীতে ১ লাখ ৮ হাজার ১৯ জন এবং পরশুরামে ৯২ হাজার ৩৪০ জন। ফেনী-২ সংসদীয় আসনে ফেনী সদর উপজেলায় মোট ভোটার ৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ জন। ফেনী-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯২ হাজার ৮৩০ জন। এরমধ্যে দাগনভূঞাতে ২ লাখ ৪৩ হাজার ১০৯ জন এবং সোনাগাজীতে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৭২১ জন।