দোকানে চুরির ঘটনায় যুবক আটক
ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে মায়ের ধাস্তাধস্তি, দোকানির মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনাগাজী
সোনাগাজীর মতিগঞ্জে দোকানে চুরির অভিযোগে ছেলেকে বেঁধে রাখার ঘটনায় দোকানি ও ছেলের মায়ের হাতাহাতিতে আব্দুল মতিন (৪৮) নামের এক দোকানির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের জিৎপুর মতিনের দোকান এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল মতিন ওই গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। এই ঘটনায় চুরির দায়ে অভিযুক্ত হৃদয় (২২) ও তার মা শাহানা আক্তার( ৪৫) কে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

স্থানীয়রা জানায়, গত দুই দিন পূর্বে ওই এলাকার স্থানীয় দোকানী নিহত আব্দুল মতিনের দোকান চুরি হয়। চোর নগদ টাকাসহ বেশ কয়েক কাটুন সিগারেট চুরি করে নিয়ে যায়। চুরি হওয়া সিগারেট ওই গ্রামের হৃদয় মতিগঞ্জ বাস স্টেশন সংলগ্ন একটি দোকানে বিক্রি করতে গেলে সেখানকার দোকানিরা তাকে আটক করে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরসহ মতিনকে খবর দেয়। মালামালসহ হৃদয়কে নিয়ে এসে নিজের দোকানের পাশে গাছের সাথে বেঁধে রাখে মতিনসহ এলাকাবাসী। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে হৃদয়ের মা শাহানা আক্তার ঘটনা স্থলে এসে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করলে দোকানী মতিন বাধা দেয়। তাৎক্ষণিক বাকবিত-া শুরু হয়ে সেটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। হৃদয়ের মায়ের হাতের কুনুইয়ের আঘাত লেগে মতিন মাটিতে পড়ে গিয়ে শরীরে কাপুনি শুরু হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মতিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা হৃদয় ও তার মা শাহানা আক্তারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী হুমায়ুন, মামুন এবং নিহতের চাচাতো ভাই এমদাদ হোসেন বলেন, মতিন এর আগে একাধিক বার হার্ট অ্যাটাক করেন। তার দোকানে চুরির ঘটনায় চোর ধরা পড়ার পর হৃদয়ের মায়ের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপরই মতিন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যায়। আমরা চাই তদন্তের মাধ্যমে দোষীরা শাস্তি পাক। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত হৃদয় ও তার মা মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। এর আগেও হৃদয়ের চুরির একাধিক অভিযোগে সামাজিক ভাবে বিচার-শালিস হয়েছে। তবে তাদের পরিবার আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল নয়।


সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত হৃদয় ও তার মাকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

পরশুরামে ইভটিজিংয়ের ভিডিও ভাইরাল, মামলা, গ্রেপ্তার ১
পরশুরাম প্রতিনিধি
পরশুরামে ইভটিজিংয়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় ৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে তৌহিদুল ইসলাম (১৮) নামে একজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় পরশুরাম বাজারের রেললাইনসংলগ্ন একটি সড়কে কয়েকজন ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক ছাত্রীদের নিয়ে নানাভাবে ইভটিজিং করছে। এরপরই ভিডিওতে থাকা ইভটিজারদের গ্রেফতারে তৎপর হয় পুলিশ। সেদিন রাতে ভিডিওতে থাকা একজনকে আটক করে পুলিশ। আটক তৌহিদুল ইসলাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম এলাকার বড় বাড়ির ইউনুছের ছেলে।

মঙ্গলবার রাতে পরশুরাম মডেল থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক শরীফ হোসেন বাদী হয়ে তৌহিদুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিসহ দন্ডবিধির ৫০৯ ধারা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পরশুরাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন পৌর এলাকার সলিয়া মুহুরী বাড়ির শফিকুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাপ্পি (১৮),অনন্তপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে সৈকত মাহমুদ (১৮), উত্তর গুথুমা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন সুমনের ছেলে সানোয়ার হোসেন সোহান (১৮), চিথলিয়া ইউনিয়নের রাজষপুর গ্রামের মোঃ আইয়ুব আলীর ছেলে সিফাত (১৮), শালধর গ্রামের মোল্লা বাড়ির আয়াজের ছেলে আবির (২১) ও মির্জানগর ইউনিয়নের ডিএম সাহেবনগর গ্রামের ডালিমের ছেলে ইমন(১৮)।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম ইভটিজিং এর অভিযোগে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে মাঠে প্রশাসন
শহর প্রতিনিধি
ফেনীতে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে শহরের পাঠান বাড়ি এলাকা ও ফেনী পাইলট হাই স্কুলসংলগ্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজন কিশোরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কিশোরদের অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত হওয়া প্রতিরোধে এবং সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।

এ বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, উঠতি বয়সী কিশোররা নির্মাণাধীন বাড়ির পেছনে কিংবা ফাঁকা জায়গায় একত্র হয়ে আড্ডা দেয়। সেখান থেকেই তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এ ধরনের কর্মকা- দমনে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। কয়েকজনকে আটক করে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিশোর গ্যাং দমনে পুলিশের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

এ সময় ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুজ্জামানসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 


ফেনীর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮৬৫৯ ঘরবাড়ি
প্রধান উপদেষ্টার ঘর উপহার ফেনীর ১১০ পরিবার পেল
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেনীতে ভয়াবহ বন্যার আট মাস পর নিজ বসতভিটায় ‘বিশেষ আবাসন নির্মাণ’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্পের আওতায় সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত ঘর পেল জেলার ছয় উপজেলার ১১০টি পরিবার। ঘরগুলো উপহার হিসেবে হস্তান্তর করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ‘নিজ বসতভিটায় বিশেষ আবাসন নির্মাণ প্রকল্প’-এর উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা। ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শহীদুল ইসলামের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর কমান্ডার ১০১ পদাতিক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ফেনী ক্যাম্পের সিও লে. কর্নেল ফাহিম মোনায়েম।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তদের পাইলট প্রকল্পের আওতায় সেনাবাহিনী ১১০টি ঘর নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ৩৫টি, ফুলগাজীতে ২০টি, ছাগলনাইয়ায় ২০টি, পরশুরামে ২০টি, সোনাগাজীতে ৫টি এবং দাগনভূঞায় ১০টি পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘরগুলো দু’টি নকশায় নির্মিত হয়েছে এবং প্রতিটি ঘরে ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। একই দিনে নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে নির্মিত ঘরেরও উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ঘর পেয়ে খুশি উপকারভোগীরা। তারা জানান, বন্যায় তাদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন।শর্শদী ইউনিয়নের জামাল উদ্দিন বলেন, বন্যার সময় আমার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ছেলে-সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ঘর পেয়ে আমি খুবই খুশি। সেনাবাহিনী সুন্দরভাবে কাজটি করেছে। এখন আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো।

লেমুয়া ইউনিয়নের নুরুল আবছার বলেন, ঘরটি আমার একমাত্র অবলম্বন। সরকার আমাকে এই ঘরটি করে দিয়েছে, আমি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। ছেলে-সন্তান নিয়ে এবার শান্তিতে থাকতে পারব।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালের বন্যায় ফেনীর ১ হাজার ৭১৮টি ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে থেকে জেলার ছয় উপজেলার ১১০টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গুণগত মান বজায় রেখে কাজটি করেছে। আমরা ঘরগুলো পরিদর্শন করেছি এগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে নির্মিত হয়েছে।

অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হয়েছে। টাকার সঠিক ব্যবহার হয়েছে। এটি স্বাভাবিক বন্যা ছিল না, মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ভয়াবহতা বোঝা গেছে বন্যা অতিক্রমের পর। তখন মানুষ ত্রাণ নিয়ে ছোটাছুটি করেছে, জানমাল রক্ষায় ব্যস্ত ছিল।

সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ঘর নির্মাণের কাজ সহজ ছিল না। কারণ, তখন রাস্তাঘাট ও ব্রিজ ভাঙা ছিল। এর মধ্যেই এ কাজটি করতে হয়েছে। এরপরও সেনাবাহিনী একটি সুন্দর ঘর তৈরি করেছে। তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজটি করেছে। এটি একটি ছোট প্রকল্প হলেও এর মাধ্যমে আমরা দেখাতে পেরেছি সৎভাবে কাজ করা, একসাথে দুর্যোগ মোকাবেলা করার দৃষ্টান্ত কীভাবে স্থাপন করা যায়। এটি আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।

তিনি আরও বলেন, বন্যার সময় মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট করেছে। দেশের সরকার হিসেবে জনগণের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব ছিল। দুর্দিনে পাশে থাকতে পেরে আমরা আনন্দবোধ করছি। মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে, এখন সন্তানদের পড়াশোনা করাতে হবে। দেশের মানুষ আপনাদের পাশে ছিল, সবসময় পাশে থাকবে।

ঘর উদ্বোধনকালে অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, ফেনী জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা, ছয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপকারভোগীরা।

উল্লেখ্য, ফেনী জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ফেনীতে বন্যায় জেলার মোট ৮ হাজার ৬৫৯টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৭১৮টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ হাজার ৯৪১টি।

 


মুন্সীরহাট আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজ
প্রাক্তনীদের উদ্যোগে ব্যতিক্রমী পাঠদান
মোর্শেদ, ফুলগাজী
শিক্ষাবান্ধব, প্রাকৃতিক ও স্বপ্নীল পরিবেশে মুন্সীরহাট আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যতিক্রম পাঠদান শুরু হয়েছে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা প্রচলিত শিক্ষার বাইরে অবৈতনিকভাবে সেমিনার ও গ্রুপ ওয়ার্কের মাধ্যমে বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাঠদানে উদ্যোগী হয়েছেন।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে বন্ধের দিনে বা সুবিধাজনক সময়ে নির্ধারিত বিষয়ে ঘণ্টাব্যাপী ক্লাসগুলোতে বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হয় এবং শ্রেণিকক্ষে ছাত্রছাত্রীদের দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করে তা সমাধানের চেষ্টা করা হয়।

এ উদ্যোগের সদস্যরা জানান, ব্যতিক্রমী পাঠদানের এ ব্যবস্থায় একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করে ক্লাস অনুযায়ী অধ্যায়সমূহ সাজিয়ে টার্মভিত্তিক পরিকল্পনা করা হয়। পাঠ পরিকল্পনার এই নতুন আঙ্গিকে সেমিনার ক্লাস নিখুঁতভাবে শিক্ষকগণ পাঠদান ও মূল্যায়ন করে। ছাত্রছাত্রীদের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ের ওপর ক্লাস শুরুর পূর্বের দিনই লেকচার শিট প্রদান করা হয়। এই লেকচার শিটে আলোচ্য বিষয়ের মূল প্রসঙ্গসহ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নসমূহ উল্লেখ থাকে, যা ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরুর আগে পড়া থাকে বলে ক্লাস চলাকালে সহজেই অনুসরণ করতে পারে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাফিদুল ইসলাম ভুঞা এ প্রসঙ্গে বলেন, এ ব্যবস্থা ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার মানোন্নয়নে অবদান রাখবে। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ নিকটবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বন্ধের দিনে নিজ প্রতিষ্ঠানে ব্যতিক্রমী এই ব্যবস্থায় আলী আজম স্কুলের শিক্ষার্থীরা খুশী বলে জানান এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী রাফিদ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজে সেমিনার ক্লাসের শিক্ষক আকিব শাহরিয়ার বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ থেকে এ ধরনের শ্রেণি পাঠদানের কৌশল নেয়া নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও প্রত্যাশিত ফলাফল বয়ে আনবে।

আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আবদুল ওহাব বাবুল বলেন প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে নতুন শ্রেণি পাঠদান শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক হবে।

সহকারী প্রধান শিক্ষক মাঈন উদ্দিন বলেন, শ্রেণি পাঠদানের পরে এ শিক্ষাদান কার্যক্রম ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সহায়ক।

আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবু তাহের মজুমদার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ ধারণায় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সরকারের সচিব আবু সাইদ চৌধুরী বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কৌশল অবলম্বন ও মানোন্নয়নে সেমিনার ক্লাস ও পাক্ষিক পরীক্ষাপদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। ক্লাসে প্রতি মাসে প্রত্যেক বিষয়ে দুটি শ্রেণি মূল্যায়ন পরীক্ষা এবং নম্বর সংরক্ষণ করে বার্ষিকে চূড়ান্ত মূল্যায়ন, নিয়মিত হাজিরার উপর ১০ নম্বর প্রণয়নসহ কোনো শিক্ষার্থী পরপর ৩দিন স্কুলে না এলে অভিভাবককে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য বিগত সময়ে আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের পাসের হার আশ্চর্যজনকভাবে হ্রাস পায়। এ নিয়ে সর্বত্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলকেই।

 

আরো পড়ুন- মহান মে দিবস : নিপীড়িত মানুষের গল্প