ফুলগাজীর আমজাদহাটে কবির আহম্মদ চৌধুরী নামে সাবেক এক বিএনপি নেতা পুলিশের হাত থেকে হ্যান্ডকাফসহ পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার এক মাস পার হলেও এখনো উদ্ধার হয়নি সেই হ্যান্ডকাফ। ধরাছোঁয়ার বাইরে পুলিশকে মারধর করে পালিয়ে যাওয়া জাল কবিরসহ তার সহযোগীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাল কবির ছাগলনাইয়া থানায় করা একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি। গত ১৫ জুলাই রাতে পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তারে ফুলগাজীর আমজাদহাটের উত্তর ধর্মপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় কবির হ্যান্ডকাফসহ পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে তার সহযোগী রাকিবসহ অন্য স্বজনদের হামলায় ছাগলনাইয়া থানার তিন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রাফিদুল ইসলাম চৌধুরী, সহকারী উপপরিদর্শক দিদারুল আলম ও কনস্টেবল সুমন সুশীল।
এ ঘটনায় পরেরদিন ১৬ জুলাই ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রাফিদুল ইসলাম চৌধুরী ৯ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফুলগাজী থানায় একটি মামলা করেন। সেদিন রাতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের উপর হামলাকারী ছয়জন ও পরবর্তী আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন-ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে আবুল বাশার (৫২), একই এলাকার আবুল কাশেমের স্ত্রী সাহেনা আক্তার (৫০), তার ছেলে মোবারক হোসেন (১৭), আবু তাহেরের স্ত্রী রহিমা আক্তার (৩৫), তার স্ত্রী জেসমিন (৪৩) ও রবিউল হকের স্ত্রী ফারহানা জাহান নোভা (২০)। বর্তমানে এদের মধ্যে অনেক আসামি জামিনে রয়েছে।
সেদিন ফুলগাজী থানাকে অবহিত করেনি
ছাগলনাইয়া থানার ওসি
এক থানা এলাকা থেকে অন্য থানা এলাকায় আসামি ধরতে গেলে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করার বিধান রয়েছে। ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম দৈনিক ফেনীকে জানান, ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ সেদিন ফুলগাজীর আমজাদহাটে প্রবেশের সময় আমাদের অবগত করেননি। সেখানে যখন পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায়, তখন তারা আমাদের অবগত করেন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, তৎকালীন ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম সেদিন ফুলগাজী থানা পুলিশকে অবগত না করেই কবিরকে গ্রেপ্তারে ফুলগাজীতে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে ফুলগাজী থানার সহায়তা চান।
ছাগলনাইয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাশার দৈনিক ফেনীকে জানান, আমরা কোথাও অভিযান করতে গেলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার থানাকে অবগত করে ওই থানার একটি টিম নিয়ে অভিযান পরিচালনা করি। এ বিষয়টি আমার যোগদানের আগের ঘটনা। এখানে কেন এমন ঘটেছে তা তখনকার দায়িত্বে থাকা ওসিই ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জানতে পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া মেলেনি।