ফেনী সদর উপজেলার মাথিয়ারা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ভূঞা নামে এক ব্যবসায়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়ে উল্টো গালাগাল ও গ্রেপ্তারের হুমকির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হামলার পর পুলিশ সদস্যের পরামর্শে থানায় গেলে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সজল কান্তি দাশ তাকে মিথ্যাবাদী বলে অপমান করেন ও জিডির কপি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে গ্রেপ্তারের ভয় দেখান।
গত শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী জাহিদুল। এর আগে ১৫ আগস্ট ফেনী মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ফেনী সদর উপজেলার মাথিয়া গ্রামের সন্ত্রাসী অপু, হাসান, জয়, সামীরসহ ৮-১০ জনের একটি চক্র এলাকায় মদ, জুয়া, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এসবের প্রতিবাদ করায় ১৩ আগস্ট রাতে তারা আমার ফার্মেসির সামনে এসে মারধর ও হুমকি দিয়ে যায়। এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করায় পরেরদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্তরা দোকানে ঢুকে আবারও আমার ওপর হামলা চালায়। পরবর্তী বিষয়টি ফেনী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক এমরান হোসেনকে জানালে রাত ৯টার দিকে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের বক্তব্য নেন এবং সকালে থানায় যেতে বলেন। পরের দিন ১৫ আগস্ট এএসআই এমরান বিষয়টি নিয়ে জিডি করার পরামর্শ দেন। তার কথানুযায়ী লিখিত কপি নিয়ে থানার ডিউটি অফিসারের কাছে গেলে, জিডি কপিসহ আমাকে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সজল কান্তি দাশের কক্ষে নিয়ে যান।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সজল কান্তি দাশ জিডির কপি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে বলেন-‘তুই কার সঙ্গে পরামর্শ করে জিডি করতে আসছিস? তুই মিথ্যাবাদী। তোকে দেখতে ক্রিমিনালের মতো লাগে। আমি এখনই তোকে এসআই দিয়ে গ্রেপ্তার করাব। তোর বিরুদ্ধে অ্যাকশান নেব’। তখন পুলিশ পরিদর্শক সজল কান্তি দাশ জিডির কপি ছুঁড়ে ফেলে দেন এবং ডিউটি অফিসারকে বলেন-এন্ট্রি করতে, আর এই জিডি গলায় ঝুঁলিয়ে রাখিস।
ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য গিয়ে যদি আমরা সাধারণ মানুষ এমন আচরণের শিকার হই তাহলে আর কিছু বলার থাকে না। আমি ব্যক্তিগত জীবনে এর আগে কখনোই থানায় যাইনি। সন্ত্রাসীদের হুমকি ও হামলার কারণে আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এখনো তাদের আতঙ্কে দোকান খুলতে পারছি না।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সজল কান্তি দাশ বলেন, মাথিয়ারার একজন ব্যক্তি একটি ঘটনায় প্রথমে অভিযোগ দিয়েছিলেন। তারপর ঘটনাটি তদন্তে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সরেজমিনে পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তী বিষয়টি সমাধানে দুপক্ষকে থানায় ডাকা হলেও তিনি আসবেন না বলে জানান। কিন্তু তারপর তিনি আবারও থানায় এসে জিডি করতে চান। এসবের প্রেক্ষিতে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়।
এ ব্যাপারে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগের বিষয়টি ইতোমধ্যে আমরা অবগত হয়েছি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যসহ পুরো বিষয়টি পুলিশ সুপার সরাসরি নজরদারি করছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।