ফেনীতে দীর্ঘ ১৩ বছর পর এক ছাত্রী অপহরণ মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এএনএম মোর্শেদ খাঁন গতকাল সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে এ রায় প্রদান করেন। রায়ে তিন আসামিকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলার অপর এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় চার আসামিই পলাতক ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ফেনী সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর পণ্ডিত বাড়ির মো. সেলিম জাহাঙ্গীরের ছেলে তৈয়ব উল্লাহ, ফেনী পৌরসভার উত্তর চাড়িপুর সামছুল হক মৌলভী বাড়ির আবদুল হক মোয়াজ্জিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাপ্পী এবং আবদুল হাইয়ের ছেলে আবদুর রহিম সজিব। রাষ্ট পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এডভোকেট সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ জানান, ২০১২ সালের ২৭ জুন ফেনী মডেল থানায় আপহরণ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জামিনে থাকাকালীন পলাতক হন। তাদের গ্রেফতারের পর থেকেই সাজা কার্যকর হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ফেনী কম্পিউটার ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিলেন তৈয়ব উল্লাহ। ২০১২ সালের ২৬ জুন সকালে ইনস্টিটিউটে যাওয়ার পথে তৈয়ব উল্লাহ ও আরও কয়েকজন মিলে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যায়। ছাত্রীর চিৎকার শুনে টহল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে এবং তৈয়ব উল্লাহকে আটক করে। অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়।
পরদিন ২৭ জুন ছাত্রীর বাবা জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুস সালামের অনুসন্ধানে চারজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। পরে ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর তৈয়ব উল্লাহ, সবুজ, শহিদুল ইসলাম বাপ্পী ও আবদুর রহিম সজিবকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালের ১৭ জুন আদালত চার্জ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করে। এ মামলায় তৎকালীন ফেনী মডেল থানার ওসি মো. মাইনুল আবছার তদন্তকারি কর্মকর্তা আবদুস সালামসহ আটজন সাক্ষ্য দেন। এই রায়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৩ বছর পর মামলার নিষ্পত্তি হলো।
