দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের লোগো নকল করে একের পর এক ফেসবুক পেজ খোলা হচ্ছে। বিনোদনের উদ্দেশ্যে এগুলো চালু করা হলেও বর্তমানে তা ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তির বড় উৎসে পরিণত হয়েছে। এসব পেজে নিয়মিত অপতথ্য, রাজনৈতিক কনটেন্ট ছাড়াও মূল গণমাধ্যমের খবর হুবহু কপি করে পোস্ট করা হচ্ছে।

সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে Anwar Tv নামের একটি পেজ। যমুনা টিভির লোগো নকল করে ২০২৫ সালের ২৬ মে পেজটি চালু হয়। তিন মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই এর ফলোয়ার দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৮ হাজারে। পেজে উল্লেখ আছে— “এটি শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য, কোনো পোস্ট সিরিয়াসলি নিবেন না; আমরা সমসাময়িক নিউজ সার্কাজম আকারে প্রকাশ করি।” কিন্তু অনেক ব্যবহারকারী এই সতর্কবার্তা না পড়ে কনটেন্টগুলোকে আসল সংবাদ ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ফলে পোস্টগুলোর নিচে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনার ঝড় উঠছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রায়হান এ প্রসঙ্গে ফেসবুকে লিখেছেন “পাঠ্যপুস্তকে সার্কাজম, মিম, আইরনি, ফ্যাক্টচেকিং শেখানো দরকার। দিল্লি স্টার আর আনোয়ার টিভির নিউজকে অনেকেই সত্যি ভেবে গালাগালি করছে।

একইভাবে ইংরেজি দৈনিক The Daily Star-এর নকল The Delhi Star নামের পেজটির ফলোয়ার সংখ্যা ১ লাখ ৭৬ হাজার। গত ১৭ আগস্ট তারা একটি ভিডিও পোস্ট করে, যেখানে দাবি করা হয়—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাদা পোশাকধারীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ভিডিওটি ১১ লাখের বেশি বার দেখা হয় এবং অনেকে এটি সত্যি ভেবে মূল ডেইলি স্টারকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। সচেতন ব্যবহারকারীরা পরে বিষয়টি পরিষ্কার করে জানান, এটি একটি সার্কাস্টিক পেজ।

এ ছাড়া দৈনিক মানবজমিনকে নকল করে খোলা হয়েছে মনিরজমিন নামের আরেকটি ফেসবুক পেজ, যেখানে রাজনৈতিক নেতিবাচক পোস্ট করা হচ্ছে। একইভাবে প্রথম সারির আরও বেশ কিছু পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলকে নকল করে ফেসবুকে ভুয়া পেজ চালানো হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণ পাঠক আসল ও নকল পেজের পার্থক্য বুঝতে না পারায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এতে প্রকৃত গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তাদের পরামর্শ, অনলাইনে পাওয়া যেকোনো তথ্য বিশ্বাস করার আগে তা যাচাই করা জরুরি। এজন্য গণমাধ্যমের ভেরিফায়েড (নীল চিহ্নযুক্ত) পেজ অনুসরণ এবং ভুয়া পেজ চিহ্নিত হলে রিপোর্ট করার ওপর গুরুত্ব দেন তারা।