ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশে গত এক সপ্তাহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এসব দুর্ঘটনার বেশিরভাগই ঘটেছে বেপরোয়া গতি ও অদক্ষ চালকের কারণে। গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মহিপাল ও ফাজিলপুর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, জনবল সংকটে তারা মহাসড়কে পর্যাপ্ত নজরদারি করতে পারছে না। দুর্ঘটনা রোধে হাইওয়ে পুলিশকে স্পিড গান ও ডোপ টেস্টের যন্ত্র সরবরাহ করা হলেও সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না।

জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদ গেট এলাকায় মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী আহমেদ শরীফ (৩৮) গুরুতর আহত হন। পরে ফাজিলপুর হাইওয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এর আগের দিন ১১ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে ঝোপে একটি উল্টে থাকা সিএনজি অটোরিকশা দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে চালক ইব্রাহিমের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ফেনীর লালপুল এলাকা থেকে গ্যাস নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে অজ্ঞাত একটি যানবাহনের ধাক্কায় তার অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

গত ৯ সেপ্টেম্বর সকালে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের তুলাতুলি এলাকায় খোনার পুকুর পাড় থেকে এনজিও কর্মকর্তা শামসুজ্জামানের (৩২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি নেত্রকোণার পূর্বতলা থানার কলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং দিশা নামের একটি এনজিওর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। পুলিশ জানায়, সেদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দাগনভূঞা কার্যালয় থেকে মোটরসাইকেলযোগে নোয়াখালীর পথে যাচ্ছিলেন শামসুজ্জামান। পথে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়। তার মাথা থেঁতলানো ও হেলমেট ভাঙা অবস্থায় ছিল।

৭ সেপ্টেম্বর সকালে ফেনীর হাফেজিয়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে যাত্রীবাহী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন। তারা হলেন, বাসের সুপারভাইজার পাবনার রঘুনাথপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম (৩৬) এবং বাসের হেলপার। এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর মধ্যম রামপুর এলাকায় দ্রুতগতির একটি গাড়ি রাস্তা পার হতে যাওয়া এক যুবককে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ঘাতক চালকদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে। প্রতিটি ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনবল সংকটে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষে সব সময় পুরো মহাসড়ক পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না।