ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার অফিস সহকারী (কাম-কম্পিউটার) আনোয়ার হোসেনকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে শহরের নির্মাণ সুপার মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোহাম্মদ আল হাসান, আবু বকর ছিদ্দিক, ফরহাদ হোসেন ও মোহাইমিন উদ্দিন খানসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে অভিযুক্ত করে ফেনী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন।

ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন বলেন, রাতে আদালত সংলগ্ন আল-আকসা হাসপাতাল থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে নির্মাণ সুপার মার্কেটের উত্তর পাশে নবী এন্টারপ্রাইজের সামনে আমাকে বেশ কয়েকজন লোক অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। তিনি বলেন, হামলার আগে আমাকে আল হাসান ও আবু বক্কর ছিদ্দিক নামে মাদ্রাসার দুই শিবির নেতা ফোনে হুমকি দিয়েছিল। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে এ হামলার তথ্য পাওয়া যাবে। আমাকে মারার জন্য ভাড়াটে লোক ধরিয়েছে। হামলার করার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনোয়ার বলেন, তারা আগে থেকে বলতো আমি নাকি শিবিরের বিরুদ্ধে কথা বলি। এছাড়া ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ কেন রাখি জানতে চান। হামলার সময়ও এটি বলেই আমাকে মারধর শুরু করে। আমি নাকি সাবেক অধ্যক্ষকে আবার আনার জন্য চেষ্টা করছি। প্রকৃতপক্ষে সাবেক অধ্যক্ষের সঙ্গে আমার কোন যোগাযোগ নেই।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রশিবিরের ফেনী শহর শাখার মাদ্রাসা সম্পাদক আল হাসান দৈনিক ফেনীকে বলেন, আলিয়া মাদ্রসার সাবেক অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের সহযোগী ছিলেন আনোয়ার। মাহমুদুল হাসান চলে যাওয়ার পর সে (আনোয়ার) ন্যায়ের পক্ষে থাকবে, অনৈতিক কাজগুলোতে আর জড়াবে না-এমন কথা বলে এখানে রয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে বিভিন্ন লেখালেখি হচ্ছে। হামলার ঘটনার দিন ধলিয়া ইউনিয়নে আমার একটি পূর্বনির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল। ধলিয়া বাজার মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে শহরে এসে বাদ এশায় একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অংশ নিই, যা শেষ হয় রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে। অনুষ্ঠান শেষে শহর সভাপতির সঙ্গে মোটরসাইকেলে সরাসরি বাসায় ফিরে আসি রাত ১১টা ৩মিনিটে। পরে জানতে পারি আনোয়ারের ওপর হামলার ঘটনায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হয়েছে।

একই অভিযোগ প্রসঙ্গে শিবির কর্মী আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, এ ঘটনায় আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সেদিন রাতে আমি বাসায় ছিলাম, যেটি সিসিটিভি ফুটেজে আছে। আনোয়ার আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের টাকা মেরে খেয়েছে। সে সাবেক অধ্যক্ষের দালাল, যিনি আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন। মারার ইচ্ছে থাকলে আমরা তাকে মাদ্রাসায় মারতে পারি, যেহেতু আমরা মাদ্রাসায় থাকি। এখন কে মারছে-না মারছে সে ব্যাপারে তো জানি না।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।