ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফেনীর তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র ৩৫ জন। ফেনী-১ ও ফেনী-৩ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিলেও সমঝোতার ভিত্তিতে সদর আসনটি (ফেনী-১) জামায়াত ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে দলটি। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর হেভিওয়েট প্রার্থী কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও গতকাল জমাদানের শেষ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেননি তিনি। তার বদলে ফেনী-২ আসনে নির্বাচনে জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোটে যুক্ত হওয়া আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দিনভর এ নিয়ে আলোচনা চলছিল ফেনীর রাজনৈতিক মহলে।
গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে ফেনী জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান দৈনিক ফেনীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় ও জোটের বৃহত্তর স্বার্থে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্যই ফেনী-২ আসনে দলীয় প্রার্থী অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া মনোনয়ন জমা দেয়নি। এছাড়া দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত আসলে আগামীতে জোটের প্রার্থীর পক্ষ হয়ে কাজ করা হবে। তবে ফেনী-১ ও ফেনী-৩ আসনে জামায়াতের দলীয় মনোনীত প্রার্থীরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যায় নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফেসবুকে পোস্ট করেন অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঞা। ওই পোস্টে তিনি বলেন, আমরা সকলেই সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য এবং আস্থাশীল। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে আমরা একযোগে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আজীবন ফেনীর মানুষের জন্য কাজ করেছি ভবিষ্যতেও করব ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আজ এক বড় জবাবদিহিতার জিম্মাদারী থেকে মুক্তি পেলাম।
অন্যদিকে গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে এ ব্যাপারে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ফেনীর অত্যন্ত জনপ্রিয় লিয়াকত আলী ভূঁইয়া দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। আমাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে উনি এখানে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। এতে জোটের আলোচনা ও জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকারের অভিপ্রায়ে যে সমঝোতা সেই জায়গা থেকে আমাকেই এ দায়িত্বটি দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি এটি একটি বড় সেক্রিফাইস।
উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ১১ দলের সঙ্গে নির্বাচনী আসন সমঝোতায় যুক্ত হয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। এর আগে এনসিপির সঙ্গে জোট করে এবি পার্টি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, বাধ্য হয়েই জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং আগামী দিনের গণতান্ত্রিক সংস্কার বাঁচিয়ে রাখতেই অধিকতর যাদের আমাদের বন্ধু মনে হয়েছে তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট ও আসন সমোঝোতার আলোচনায় সম্পৃক্ত হয়েছি। কিছু বিষয়ে সমঝোতা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, আরও আলোচনা বাকি আছে। আমাদের কাছে শুধু আসন ভাগাভাগি গুরুত্বপূর্ণ নয়, গণভোটে হ্যাঁ-এর পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করাও বড় অঙ্গীকার।
নির্বাচন থেকে অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঞা সরে দাঁড়ানোয় তার সমর্থকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে আসিফ মাহমুদ নামে একজন মন্তব্য করেন, জোটবিহীন নির্বাচনে নামার মতো ন্যূনতম সাংগঠনিক শক্তিও মঞ্জুর নেই। সদর উপজেলার সব কেন্দ্র তো দূরের কথা, অর্ধেক কেন্দ্রেও ঠিকমতো এজেন্ট দেওয়ার সক্ষমতা তার নেই। মাঠে যার অস্তিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ, তাকেই নাকি জনগণের প্রতিনিধি বানানো হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে আলোচনা সমালোচনার পাশ কাটিয়ে জামায়াত জোটের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন মঞ্জু। গতকাল সন্ধ্যায় অধ্যাপক লিয়াকত আলীর বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন তিনি। অন্যদিকে ফেনী-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী এসএম কামাল উদ্দিন ও ফেনী-৩ আসনে মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ফেনীতে মনোনয়নপত্র
জমা দিলেন ৩৫ জন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ফেনীর তিনটি আসনে মোট ৩৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে ফেনী-১ আসনে ১০ জন, ফেনী-২ আসনে ১৪ জন ও ফেনী-৩ আসনে ১১ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে ২৯ জন বিভিন্ন দলীয় ও ৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী-১ আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রার্থী কাজী গোলাম কিবরিয়া, জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী এসএম কামাল উদ্দিন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোতাহের হোসেন চৌধুরী, গণমুক্তি জোট থেকে মাহবুব মোর্শেদ মজুমদার, খেলাফত মজলিস থেকে মোহাম্মদ নাজমুল আলম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে আনোয়ার উল্ল্যাহ ভূঞা, বাংলাদেশ কংগ্রেস থেকে মো. ফিরোজ উদ্দিন ভূঁইয়া ও স্বতন্ত্র হিসেবে নিজাম উদ্দিন ভূঞা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে ফেনী-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৪ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মোহাম্মদ একরামুল হক ভূঁঞা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) থেকে সামসুদ্দিন মজুমদার, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল মার্কসবাদী (বাসদ) থেকে জসিম উদ্দিন, খেলাফত মজলিশ থেকে মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে মোহাম্মদ আবুল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদ থেকে মো. তারেকুল ইসলাম ভূঞা, আমজনতা দল থেকে সাইফুল করিম মজুমদার, ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রার্থী তাহেরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ ভূঞা। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এয়াকুব নবী, কানাডা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবীর পাটওয়ারী ও মো. ইসমাইল।
অন্যদিকে ফেনী-৩ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু, ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রার্থী মো. হাসান আহমদ, জাতীয় পার্টি থেকে মো. আবু সুফিয়ান, জামায়াতে ইসলাম থেকে মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মো. সাইফ উদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে মোহাম্মদ আলী, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ থেকে মো. আবু নাছের, ও সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) থেকে আবদুল মালেক মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে খালেদ মাহমুদ ও জেলা বিএনপির সদস্য মাহবুবুল হক রিপন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হক বলেন, তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয়ে কঠোর নজরদারি রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর।
এর আগে ফেনীর তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র ৪৮ জন।
খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র
জমা, রয়েছে বিকল্প প্রার্থী
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ (ছাগলনাইয়া-ফুলগাজী-পরশুরাম) আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হকের হাতে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন তাঁর নির্বাচনী সমন্বয়ক মুন্সি রফিকুল আলম, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ওরফে ভিপি জয়নাল। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রেহানা আক্তার রানু, আবু তালেব, শাহানা আক্তার শানু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
একই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক ও ওই আসনের নির্বাচনী সমন্বয়ক রফিকুল আলম মজনু। এ প্রসঙ্গে জানান খালেদা জিয়ার মনোনয়ন জমা দিতে আসা দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, নেত্রী অসুস্থ থাকায় বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে। যদি শেষ মুহূর্তে তিনি ভোট করতে না পারেন তখন বিকল্প চিন্তা করা হবে। তবে খালেদা জিয়া মাঠে না থাকলেও তাঁর পক্ষে প্রচার প্রচারণা চলমান।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এ আসন থেকে বিপুল ভোটে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি বেগম খালেদা জিয়াকে সহযোগিতার জন্য কাজ করব।
একইসময় ফেনী-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন ও ফেনী-৩ আসনে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
ফেনী-১ আসন থেকে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ কংগ্রেস, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, গণমুক্তি জোটের প্রার্থীসহ ১৬ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তাদের মধ্যে গতকাল ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘন করায়
জরিমানা গুনল বিএনপি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমাদানে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ফেনী জেলা বিএনপিকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ফেনীর তিনটি সংসদীয় আসনের প্রার্থীরা পাঁচজনের অধিক সদস্য নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করায় দলটির জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচারণবিধিমালা ২০২৫ এর ৯ এর (ঘ) ধারায় রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থী ও তার প্রতিনিধিসহ পাঁচজনের অধিক সদস্য আসায় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাদের পক্ষে জেলা বিএনপির সদস্য মো. শাহাদাত হোসেন জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, আচারণবিধি লঙ্ঘন করায় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দলের পক্ষে তাদের একজন সদস্য জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছেন।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মনিরা হক বলেন, আচারণবিধি লঙ্ঘন করায় একটি রাজনৈতিক দলকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যতজন আসার কথা, তাদের সঙ্গে তার থেকে বেশি লোকজন আসাতে এ জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন বিএনপি
নেতা এয়াকুব নবী
ফেনী-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হকের কাছে তার পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ আসনটিতে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন (ভিপি জয়নাল)।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রসঙ্গে এয়াকুব নবী বলেন, বিগত সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা রাজপথে ছিলাম। তারই প্রেক্ষিতে আমাদের মধ্যে কেউ একজনকে দলীয় মনোনয়ন দেবে-এমনটি চেয়েছিলাম। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় আমি স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। তবে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে যদি ভিপি জয়নালকেই রাখেন তাহলে দলের প্রতি সম্মান জানিয়ে ধানের শীষের জন্য কাজ করব।
এর আগে ফেনী-২ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ঘিরে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনৈক্য দেখা যায়। এ নিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলালের একটি প্রতীকী রিভিউ আবেদন সারা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে সর্বশেষ গতকাল তারাও বিএনপির দলীয় প্রার্থী অধ্যাপক জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
উল্লেখ্য, এ আসনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
