২০২২ সালে ৬ ডিসেম্বর রাতে ফেনী শহরের জেল রোডে বড় পর্দায় খেলা দেখতে গিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছুরিকাঘাতে খুন হয় দিনমজুর জসিম উদ্দিন। হত্যা মামলার ২ বছর ১ মাস পার হলেও এখনো বিচার কাজ শুরু হয়নি। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী বাদীর উপস্থিতিতে চার্জশিট গ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কোমল কুমার সাহা প্রাপ্তবয়স্ক ৬ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ৭ জনকে আসামি করে ২ ভাগে চার্জশিট প্রদান করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ মামলায় ৯ আসামীকে গ্রেফতার করে। ৩ আসামী স্বীকাররোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে।

বিচার শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলার বাদী মোঃ কাফি। তিনি ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। আমরা গরিব মানুষ, আইন -আদালত সম্পর্কে কিছু বুঝি না।

এদিকে হত্যার ঘটনায় শাওন হোসেন ইমন (১৯) কে প্রথমে গ্রেফতার করে একদিনে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ও স্বীকাররোক্তিমুলক জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। এ মামলায় সম্রাট ও শাওন নামে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছোরাটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কোমল কুমার সাহা জানান, জসিম হত্যা মামলার আসামী সম্রাটসহ ৬ জনের বিচার শিশু আদালতে হবে।

২০২২ সালে ৭ ডিসেম্বর নিহত জসিম উদ্দিনের পিতা মোঃ কাফি বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ৬/৭ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। গাইবান্দা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় রামবেতপুর গ্রামের মোঃ কাফির ছেলে জসিম উদ্দিন। জসিম তার বড় ভাইর সাথে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। ছোট কাল থেকে সে সহদেবপুরে বসবাস করে আসছে। তার পিতা মোঃ কাফি একজন রিক্সা চালক।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে ৬ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে ফেনী শহরের জেল রোড়ে বড় পর্দায় ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়ার খেলা দেখতে আসে সহদেবপুরের জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন যুবক। খেলায় ৪র্থ গোল উদযাপন করার সময় সহদেবপুর ও মাস্টারপাড়ার দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে মাস্টারপাড়ার কিশোর গ্যাং গ্রুপ সহদেবপুরের গ্রুপকে ধাওয়া করে। পরে তারা জসিম উদ্দিনকে (১৫) ছুরি দিয়ে আঘাত করে। জসিম রাস্তার পড়ে গেলে তাকে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। জসিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ ডিসেম্বর সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের সময় মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যার দিকে লাশ সহদেবপুরে আনা হয়। ২০২২ সালে ১০ ডিসেম্বর সকালে গাইবান্দা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় রামবেতপুর গ্রামে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ওই সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাস্টারপাড়ার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে শাওন হোসেন ইমনকে (১৯) গ্রেফতার করে। শাওন পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে। এসআই কোমল কুমার সাহা ২০২২ সালে ১১ ডিসেম্বর সাড়ে ৯টার দিকে পুরাতন কারাগারের সামনে অভিযান চালিয়ে শাফায়ের হোসেন সম্রাটকে গ্রেফতার করে। সে মাস্টারপাড়ার মিয়াজী ভূঞা বাড়ীর আবদুর রশিদের ছেলে।