ফেনী পৌরসভার ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু অংশ মিলিয়ে গঠিত সৈয়দনগর গ্রাম। আধুনিক যুগে এসেও নানা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত এ গ্রামের অন্তত সাড়ে ৩শ’ পরিবার। এলাকার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম সড়কটি বেহাল দশায় পড়ে আছে দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০৫ সালে ফেনী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তখনকার মেয়র নুরুল আবছার ইটের সলিং থেকে পিচঢালা রাস্তায় রূপান্তর করেছিলেন সড়কটি। কিন্তু এরপর দেড় যুগ অতিক্রম করলেও সড়কটির অবস্থা আজও পরিবর্তন হয়নি। দীর্ঘ এতো সময় গেলেও সড়কটি সংস্কারে নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। গত দেড় যুগে ফেনী পৌরসভায় তিনজন মেয়র বদলেছে, কিন্তু সৈয়দনগরের উন্নয়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এলাকার বয়োবৃদ্ধ বাসিন্দা মো. ইউনুছ বলেন, বিগত ২০ বছর আগে মেয়র নুরুল আবছার আমাদের গ্রামের এ রাস্তাটি করেছিলেন। এরপর আর এ রাস্তার কোন সংস্কার বা উন্নয়ন হয়নি। এ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চলাচলে ভোগান্তি পোহালেও পৌরসভা কোনদিন দেখতেও আসেনি।
মাঈন উদ্দিন মুন্না নামে আরে বাসিন্দা বলেন, সড়কটির অন্তত চার-পাঁচটি স্থানে ভাঙা অংশ মাটির সঙ্গে মিলেমিশে গেছে। সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত ড্রেনগুলোও বেহাল এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্ন করা হয় না। বর্ষাকালে ড্রেন উপচে সড়কে পানি জমে যাওয়ায় চলাচল প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়ে।
মোবারক হোসেন রনি নামে এলাকার এক তরুণ বলেন, গত সরকার আমলে কয়েকদফা রাস্তাটি সংষ্কার করবে বলেও করেনি। আমরা চাই দ্রুত এ রাস্তাটি সংষ্কার শুরু করার অনুরোধ করছি।
ফকির আহম্মদ নামে এক বাসিন্দা, মেয়র নুরুল আবছার থাকতে এ রাস্তা করছে। এরপর কত মেয়র-কমিশনার এলোগেলো এ রাস্তার দিকে কেউ ফিরেও তাকায়নি। পৌর কর্তৃপক্ষ ঠিকভাবে ড্রেনগুলোও পরিষ্কার করে না।
হাফেজ আহম্মদ নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, এ এলাকার প্রায় সাড়ে ৩শ’ পরিবার, অর্থাৎ কয়েক হাজার মানুষ এই দুর্ভোগের মুখোমুখি হন। সর্বশেষ ২০২৩ সালে পরপর দুইবার দায়িত্বশীলদের আশ্বাস সত্ত্বেও মেরামত হয়নি। এরপর ক্ষমতার পালাবদলের পর পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক সংস্কার হলেও সৈয়দনগরের এই সড়ক নিয়ে এখনও কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
রিক্তা নামের এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের দুর্ভোগের অবসান চাই। বর্ষা এলেই এই সড়কে চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দায়িত্বশীলদের থেকে দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি পাওয়া সত্ত্বেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা হয়নি।”
এ বিষয়ে ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে পৌরসভার কয়েকটা ওয়ার্ডে ৬০ কিলোমিটার কাজ চলমান রয়েছে। সৈয়দনগর সড়কটি প্রায় ৪০০ মিটার।
দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকার সড়কটি বেহাল দশার বিষয়টি জেনেছি। সহসা সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। বিশ্ব ব্যাংকের আরইউটিডিপি প্রকল্প বা অন্য যে কোন প্রকল্পের বাজেট এলে আমরা সহসায় কাজ শুরু করতে পারবো।
