ফেনীর ফতেহপুরে জজ আদালতের সেরেস্তাদার এনামুল হকের (৫০) মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা বিরাজ করছে। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসেবে তার পরিবার দাবি করলেও গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত তার মৃত্যুর কোন কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ। এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফতেহপুর রেলক্রসিং সংলগ্ন ঝোপ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় লাশটির গলায় শার্ট প্যাঁচানো অবস্থায় একটি গাছে ঝুলছিল। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
ফেনী আদালতে সেরেস্তাদার এনামুল হক সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের নগরকান্দা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি পৌরসভার বারাহীপুর এলাকার মোমেনা ম্যানশনে ভাড়া বাসায় থাকতেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজীমসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক বাকপ্রতিবন্ধী রেললাইনের পাশে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে ফতেহপুর ওভারব্রিজের নিচে থাকা স্থানীয় লোকজনকে জানান। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে নিহতের স্বজনরা জানান, সকাল ৭টার দিকে আদালতে যাওয়ার জন্য এনামুল হক বাসা থেকে বের হন। পরে দুপুরের দিকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে দ্রুত স্বজনরা ঘটনাস্থলে আসেন। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন তারা।
এনামুলের ছেলে মো. সৈকত জানান, সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমাকে দরজা বন্ধ করতে বলেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর আমাদের এক আত্মীয় ফোন করে বলে- তোমার বাবার লাশ ফতেহপুর রেললাইনের পাশে পড়ে রয়েছে। ওইসময় উনার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করা হয়নি। পরে লাশ উদ্ধারের সময় মোবাইল ফোনটি পকেট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম বলেন, তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এ প্রসঙ্গে ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক এসআই ফারুক মিয়া জানান, সুরতহাল করার সময় তার গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এ ব্যাপারে জানতে ময়নাতদন্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এ মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
