ফেনীর জজ আদালতের সেরেস্তাদার এনামুল হক (৫০) আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করছে পুলিশ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) জজ আদালতের নিচতলায় এনামুল হকের অফিস থেকে উদ্ধার করা একটি চিরকুটের সূত্র ধরে ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দৈনিক ফেনীকে বলেন, গতকাল সকালে তার অফিসের একটি ফাইলের মধ্য থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে লিখার সূত্র ধরে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ওই চিরকুটটিতে তিনি নিজের দায়-দেনা ও পারিবারিক অশান্তির কথা উল্লেখ করেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে তিনি নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে।
তবে ফেনী জজ আদালতের নাজির ও বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন ও এনামুলের আত্মহত্যার বিষয়টি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা। পুলিশের এ দাবির সঙ্গে আমরা একমত নই। এনামুলের প্যান্টে লেগে থাকা কাঁদা ও অন্যান্য আলামত দেখে মনে হয়না এটি আত্মহত্যা। আত্মহত্যার ইচ্ছে থাকলেও তিনি কেন রেললাইনের পাশে যাবেন, অন্য জায়গায় তো যেতে পারতেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যে ঘেরা। নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এ নিয়ে আমাদের সন্দেহ বেড়ে গেছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তিনি। তিনি আরও জানান, উদ্ধার করা চিরকুটে তার কোন ভাই কোন ফ্লোরে থাকবে এবং তার মাকে দেখে রাখার কথা লিখা আছে।
গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফতেহপুর রেললাইনের পাশের একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এনামুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় লাশটির গলায় শার্ট প্যাঁচানো অবস্থায় ছিল। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এনামুল হক সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের নগরকান্দা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি পৌরসভার আলিমুদ্দিন সড়কের মোমেনা ম্যানশনে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে এনামুলের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে দুপুর ২টার দিকে ফেনী জজ আদালত প্রাঙনে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ আসর ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের নগরকান্দা গ্রামে দুলা মিয়ার বাড়ির সামনে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে এনামুলের বোন ও স্বজনরা দাবি করেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন তারা।
