ফুলগাজীতে খালেদা জিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তানজিলীনা বিনতে তাজুল এবার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উপজেলার ৮২৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছেন মানবিক বিভাগের এ শিক্ষার্থী। ভবিষ্যতে একজন সফল আইনজীবী হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে চান এ মেধাবী শিক্ষার্থী।

তানজিলীনা উপজেলার পশ্চিম বশিকপুর খন্দকার বাড়ির প্রবাস ফেরত সৈয়দ তাজুল ইসলাম স্বপন ও গৃহিণী রাশেদা আক্তার দম্পতির মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি মেজো। তার বড় ভাই সৈয়দ তাওফিক তাজুল নিলয় স্নাতকে অধ্যয়নরত এবং ছোট বোন তানজিন তাজুল মুন্সীরহাট আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন। মুন্সীরহাট আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকেই এসএসসি পাস করেছিলেন তানজিলীনা। তখন প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় তিনি আরও মনোযোগী হয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলের লক্ষ্য স্থির করেন। পারিবারিকভাবে মা-বাবার পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি, ছিল না গৃহস্থালির কোনো কাজের চাপও।

নিজের অনুভূতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে তানজিলীনা বলেন, এ ফলাফলে আবার মা-বাবা ও শিক্ষকদের অনেক অবদান রয়েছে। এখন লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে একজন সফল আইনজীবী হওয়া। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে দেশের মানুষের পাশে থাকতে চাই।

নারী শিক্ষার প্রসারে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে এ কৃতি শিক্ষার্থী বলেন, আমি কখনো ইভটিজিংয়ের শিকার হইনি। যারা এমন কাজ করে, তাদের ঘৃণা করি। নারী শিক্ষার পথ সুগম করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এছাড়া খালেদা জিয়া মহিলা কলেজে ভর্তি হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদানও অনস্বীকার্য।

তানজিলীনার বাবা সৈয়দ তাজুল ইসলাম স্বপন বলেন, মেয়ের সাফল্যে আমরা গর্বিত। আমি প্রবাসে থাকলেও তার পড়াশোনার প্রতি সবসময় মনোযোগ ছিল। তার ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমই এ সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আমার মেয়ে ন্যায় ও সত্যের পথে থেকে সমাজের জন্য কাজ করবে এমটিই চাই।

তার মা রাশেদা আক্তার বলেন, তানজিলীনাকে কখনো ঘরের কাজের জন্য চাপ দেইনি। পড়াশোনা যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয় সেটিই দেখেছি। সে নিয়মিত রাত ১২টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। মেয়েদের সুযোগ দিলে পারে-এ ফলাফল তারই প্রমাণ। সকলের কাছে আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য দোয়া চাই। 

এ ব্যাপারে খালেদা জিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আশিষ কুমার লোধ বলেন, তানজিলীনা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। সে কখনো ক্লাস মিস করেনি। এর আগেও প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। আমরা তার সাফল্যে গর্বিত। আশাকরি সে ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজ করবে।