চলতি বছরের ২১ জুলাই ছাগলনাইয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে শেষ কর্মদিবস অতিবাহিত করেন শিবু দাশ সুমিত। এরপর দুই মাস এক দিন এই পদ শূন্য থাকে। পরবর্তীতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) এসএম অনীক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ছাগলনাইয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে দায়িত্ব থাকা মুক্তা গোস্বামীকে পদায়ন করা হয়।

জানা গেছে, ভারত সীমান্তবর্তী ছাগলনাইয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদ দুই মাস শূন্য থাকার পর এ পদে নতুনের আগমনের বার্তা পেয়ে উপজেলাবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও পদয়ানকৃত কর্মকর্তা মুক্তি গোস্বামী ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকবেন-বিষয়টি অবগত হয়ে জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, জেলার ছয় উপজেলার মাঝে সার্বিক দিক বিবেচনায় ফেনী সদর উপজেলার পর ছাগলনাইয়া উপজেলার অবস্থান সর্বমহল অবগত। গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে ২০২৪ সালের ২১ মে থেকে চলতি বছরের ২১ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী শিবু দাশ সুমিত ভূমি সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ফেনী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, ফসলি জমির মাটি কাটা, বাজার মনিটরিং, পৌর শহরের যানজট নিরসনে নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনকল্যাণে সরকারের অর্পিত দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করেছিলেন। তাকে এ উপজেলা থেকে সরিয়ে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাবেন এমন একজন কর্মকর্তাকে ছাগলনাইয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়ন করার সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন উপজেলাবাসী। অন্যদিকে, একই ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদে থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করাতে কাজের গতিশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা।

পশ্চিম ছাগলনাইয়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, পৌর শহরে প্রতিদিন যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে যানজটে নাকাল অবস্থা বিদ্যমান। এছাড়া শুকনো মৌসুমে উপজেলাব্যাপী মাটি খেকো সিন্ডিকেট ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসবে মেতে উঠে। এসিল্যান্ড না থাকায় বিষয়টি অসাধু সিন্ডিকেট জানতে পেরে ফসলি জমির মাটি কর্তনে তারা পূর্ব প্রস্তুতি নিতে দেখা যাচ্ছে।

উপজেলার রাধানগরের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, ছাগলনাইয়া উপজেলা ভূমি অফিসের নিয়মিত সেবা ও নাগরিকদের অন্যান্য সেবা নিশ্চিতে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা এসিল্যান্ড কাজে যোগদানের পূর্ব সময় পর্যন্ত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এ উপজেলায় পদায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখলে আমরা উপকৃত হবো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছাগলনাইয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়নকৃত মুক্তা গোস্বামী গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনলাইনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগদান করে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন।

এদিকে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ও মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা দোষের কিছু নয় মন্তব্য করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) এসএম অনীক চৌধুরী দৈনিক ফেনীকে জানান, এসিল্যান্ড ছয়মাসের ছুটিতে থাকাতে যদি উপজেলাবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়, তবে তার বিকল্প হিসেবে আমরা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বিবেচনা করব।