ফুলগাজী উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কমিটির ৩ বছরের মেয়াদ ইতিমধ্যেই ৮ বছর পূর্ণ করেছে। তবে দীর্ঘ বছর পার হলেও সমিতির বর্তমান নেতৃবৃন্দ এখনো নতুন কোনো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষকরা। তারা জানান, বারবার নির্বাচন চেয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। দীর্ঘমেয়াদী কমিটি কার্যক্রমে উদাসীন থাকায় সমিতির সকল সাংগঠনিক কার্যক্রমও ভেঙে পড়ছে। ফুলগাজীর একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, সমিতিকে কার্যকর রাখতে ও সক্রিয় রাখার জন্য নতুন কমিটি গঠন করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

জানা গেছে, এতে পূর্বে সভাপতি অজিত কুমার পালের অবসরজনিত কারণে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দায়িত্ব পান ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ঘনিয়ামোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোসলেহ উদ্দিন এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পান জিএমহাট ইউনিয়নের পশ্চিম বশিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবু মুসা। এ কমিটির মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সেই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিই দিয়ে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হলে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দায়িত্ব পালন করবে। অথচ একটি কমিটি ৩ কমিটির মেয়াদকাল পার করছে। তারা আরও বলেন, নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও কয়েকজন শিক্ষকদের অনাগ্রহের কারণে নির্বাচন হচ্ছে না।

গোসাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) কামাল উদ্দিন জানান, ফুলগাজী উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন হয় গত ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিম বশিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবু মুসা বলেন, সমিতির বিষয়ে একটি মামলা থাকায় কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। বর্তমান কমিটির সভা আহবান করে পরশুরাম ও সোনাগাজীর মতো আমরা দ্রুত একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করবো।

এ বিষয়ে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পশ্চিম ঘনিয়ামোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মামলা জনিত কারণে নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য আহবায়ক কমিটি গঠিত হবে। নির্বাচন না হলেও কমিটি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচন না হওয়া ও একটি কমিটি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করায় শিক্ষকদের স্বার্থ ব্যাহত হচ্ছে কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি শিক্ষকরাই বলতে পারবে।

প্রসঙ্গত, ফুলগাজী উপজেলায় ৬৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাড়াও তিন শতাধিক সহকারী শিক্ষক সহ প্রায় চারশত শিক্ষকদের সমন্বয়ে এ সমিতি গঠিত হয়। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ফুলগাজীতে শিক্ষকদের চাঁদার অর্থে শিক্ষা কর্মকর্তার বিদায় সংবর্ধনা নিয়ে দৈনিক ফেনীতে সংবাদ প্রকাশিত হলে এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।