ফুলগাজী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সিলোনিয়া নদী এখন হারাতে বসেছে তার স্বাভাবিক স্রোতধারা। উপজেলার অপর দুই নদী মুহুরী ও কহুয়ার মতোই এ নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে একটি চক্র। এতে জমিতে সেচের জন্য পানি সংগ্রহ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি নদীটির অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুন্সীরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জামমুড়া গ্রামের পূর্বাংশে একসময়ের স্রোতস্বিনী নদীটি এখন ঝোপঝাড়ে আচ্ছাদিত। ভয়াবহ বন্যার পর পলি ও আগাছায় নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছু অসাধু ব্যক্তি নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার ফাঁদ পেতেছে, এতে বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ।
এছাড়াও মুন্সীরহাট থেকে বন্দুয়া পর্যন্ত নদীর পাড় ভরাট করে বসতি স্থাপন ও কৃষিজমি দখলের প্রবণতা বাড়ছে। পাউবোর সেচ প্রকল্পের ড্রেনেজ সংলগ্ন নদীর পাড় ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়রা বাঁশের আড়া দিয়ে পাড় রক্ষার চেষ্টা করছেন। জামমুড়া ব্রিজের দক্ষিণ অংশে সেচ প্রকল্প ও উত্তরে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা এখন অব্যবস্থাপনায় অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা এখানে কখনো আসেননি। বন্যার পর ঝোপঝাড় হয়ে আছে, গাছ শুকিয়ে নদীর বুক জুড়ে কঙ্কালের মতো দাঁড়িয়ে আছে। কিছু স্থানে নদীর পাড় ও ভেতরে এখন ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে।
এদিকে মুহুরী প্রকল্পের প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার কাজ অনুমোদিত হলেও সিলোনিয়া নদীর নাব্যতা ফিরে পেতে সময় লাগবে আরও কয়েক বছর। স্থানীয়দের দাবি, পরিকল্পিত ড্রেজিং ও নদীশাসনের উদ্যোগ নিলে নদীর প্রাণ ফিরবে এবং নদীদূষণও অনেকটা রোধ হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফাহাদ্দিস হোসাইন বলেন, মুহুরী প্রকল্পের আওতাধীন ১২২ কিলোমিটার নদীপাড়ে এমন সমস্যা রয়েছে। সরকারের অর্থায়নে ঝোপঝাড় পরিষ্কার ও পানি প্রবাহ সচল রাখার কাজ চলছে। প্রকল্পের পূর্ণ অনুমোদন বাস্তবায়িত হলে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় নদীগুলোর অবস্থার উন্নতি হবে।
ফুলগাজী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাশিয়াত আকতার বলেন, সরকারের পাশাপাশি নদী দখলমুক্ত ও পানি প্রবাহ সচল রাখতে স্থানীয় এলাকাবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট ‘দখল-ভরাটে অস্তিত্ব সংকটে ফুলগাজীর খাল-জলাধার’ শিরোনোমে দৈনিক ফেনীতে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
