ফুলগাজী উপজেলার জিএমহাট ইউনিয়নের নুরপুরে দুর্বৃত্তের আগুনে পাকা ধান পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বর্গাচাষি সোলেমানকে (৬৮) আর্থিক সহযোগিতা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম। বুধবার (২৬ নভেম্বর) কৃষক সোলেমানের সাথে দেখা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন তিনি। এ ব্যাপারে ইউএনও বলেন, এটি খুবই দুখঃজনক ঘটনা। কৃষককে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে কৃষি প্রণোদনাসহ সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
এ সময় জিএমহাট ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী সৈয়দ আসিফ মাহমুদ, সমবায় কর্মকর্তা মুরাদ হোসেনসহ স্থানীয় এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল ভোর রাতে নুরপুরের গ্রামীণ সড়কের পাশে রাখা বি-৫১ জাতের পাকা ধানের স্তুপে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় কৃষক সোলেমানের চাষ করা প্রায় ৬০ শতাংশ অর্থাৎ দেড় কানি জমির ধান। সোলেমান রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন দুর্গাপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিম মুন্সির ছেলে। জীবিকার সন্ধানে তিনি গত আট বছর ধরে ফুলগাজীর নুরপুরে বসবাস করছেন। স্থানীয় গোফরান সওদাগরের দোকানঘর ভাড়া নিয়ে দিনমজুরির করলেও কৃষিকাজই তার মূল জীবিকা। চলতি মৌসুমে তিনি সাড়ে ১৬ কানি মোট ৬৬০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেছেন।
সোলেমান জানান, তার কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই এবং কাউকে সন্দেহও করেন না। ছাই দেখাতে দেখতে বলেন, দাহ্য পদার্থ বা পোড়া মবিল দিয়ে দূর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার টাকার ক্ষতি হলো। মাড়াইয়ের আগেই সব ছাই হয়ে গেল।
জানা যায়, জমির মালিক মাওলানা মোঃ আবুল কালাম বর্তমানে চট্টগ্রামে থাকেন। বর্গাচুক্তি অনুযায়ী ধানের এক-চতুর্থাংশ মালিকের প্রাপ্য। বাজার থেকে ১ হাজার ৬ শত টাকার নেট কিনে ধান ঢেকে রেখেছিলেন সোলেমান। কিন্তু আগুনে সবকিছু শেষ হয়ে যায়।
স্থানীয় স্বপন নামে এক ব্যক্তি ভোরে আগুন দেখতে পেয়ে সোলেমানকে খবর দেন। তিনি ছুটে এসে জ্বলে যাওয়া ধানের ছাই দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে ফুলগাজী থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে তাকে দ্রুত সহযোগিতা করা হবে।
নুরপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ শাখাওয়াত হোসেন ও রিপনের ধারণা, ঘটনাটি কিভাবে হলো জানি না। এতো রাতে এখানে কেউ সিগারেটের আগুন দেয়ার জন্যও আসার কথা নয়। তারা বলেন দীর্ঘদিন ধরে সোলেমান এখানে বসবাস করেন। খুবই ভালো মানুষ। তারা দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
