সোনাগাজীতে নৃশংসভাবে আবুল হাশেম হত্যাকাণ্ড মামলায় ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নোয়াখালী সুবর্ণচর, সোনাগাজীর চর দরবেশ এবং ওলামা বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) আসামিদের বসতঘর ও একটি গ্যারেজে থেকে হত্যার সময় পরিহিত বোরকা, দা, রক্তমাখা রড, ওড়না উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উত্তর চর চান্দিয়ার মৃত সৈয়দ আহম্মদের ছেলে প্রধান আসামি আক্তার হোসেন। আক্তার হোসেন হাদা ব্যাপারি জামে মসজিদের ইমাম। অন্যান্যরা হলেন চরচান্দিয়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মফিজুল হকের ছেলে মো: রাসেল, মৃত মোহাম্মাদ এনামুল হকের ছেলে মোঃ সোলেমান (৪৫), চরচান্দিয়া ৫নং ওয়ার্ডের আবুল বশর মানিকের ছেলে মো: শিপন (৩২), চরচান্দিয়ার ৮নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল ইসলাম (২২), বেলায়েত হোসেন (৩০), আবুল হোসেন (৪৬) ।
পুলিশ জানায়, প্রধান আসামি আক্তার হোসেনকে গত মঙ্গলবার রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর-জব্বার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া একই দিন বিভিন্ন সময় আসামি রাসেল, রাকিব, শিপন এবং তদন্তে আসামী সোলেমানকে সোনাগাজীর চর দরবেশ এবং ওলামা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামি আক্তার ও রাকিবের স্বীকারোক্তি মতে তাদের বসত বাড়ি থেকে হত্যার সময় পরিহিত তিনটি বোরকা, ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী সাজেদা ফাউন্ডেশনের পিছনের গ্যারেজ থেকে একটি দা, দুইটি রক্ত মাখা রড়, একটি ওড়না, তিন প্যাকেট বিস্কুট উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় নিহতের পিতা আবদুর শুক্কুর বাদি হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, জমিজমা ও পারিবারিক আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে খুন হওয়া আবুল হাশেমের পারিবারের সাথে একই গ্রামের হাদা ব্যাপারী পরিবার ও ননা মিয়া পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত চলে আসছিল। দ্বন্দ্বে তাদের মধ্যে একাধিক পাল্টাপাল্টি মামলাও চলমান । ২০ বছর আগে জমি বিরোধের জেরে নিহত আবুল হাশেমের পিতা আব্দুস শুক্কুরকে প্রতিপক্ষ পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দিলে তিনি অনেকটা পঙ্গুত্ববরণ করেন। সেই বিরোধ প্রকট আকার ধারণ করে ২০২১ সালে ৩১ মে কৃষক বেলালকে কুপিয়ে হত্যার মধ্যদিয়ে। সেই সময় এই হত্যাকাণ্ডে কৃষক বেলালের ভাই ননা মিয়া বাদি হয়ে আবুল হাশেম ও তার পিতা আব্দুস শুক্কুরসহ ৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তিন বছর কারাভোগের পর হাশেম জামিনে মুক্তি পান এবং সোনাগাজীর মুহুরী সড়কের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন আবুল হাশেম।