মুজিব জন্মশতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে প্রস্তুতি সভা করেছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান।


আজ সোমবার (২ মার্চ) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রস্তুতি পর্বের বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। একই সভায় ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের প্রস্তুতি বিষয়েও তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক।


এসময় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবস পালন করতে সরকারি দপ্তরসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন ও বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।


সভায় জেলা প্রশাসক জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ১৭ই মার্চ শুরু হতে যাচ্ছে। এদিন সকল সরকারি দপ্তরে জাতীয় পতাকার সাথে মুজিব বর্ষের লোগো সম্বলিত পতাকা উত্তোলন করতে হবে। তিনি বলেন, তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর সকাল ৯টায় শহরের জেল রোডে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে স্মৃতিস্তম্ভ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শুরু হয়ে শহরের মিজান রোড হতে ট্রাংক রোড ঘুরে একইস্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হবে। র‌্যালি ও সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য শহরের সকল স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন জেলা প্রশাসক।


তিনি জানান, দুপুরে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।


সভায় মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ১৭ মার্চ বিকাল ৪টায় আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিববর্ষের উদ্বোধন করা হবে। শহরের ট্রাংক রোডের শহীদ মিনারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।


জেলা প্রশাসক বলেন, প্রত্যেক উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়নও কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করবে। মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন শেষে শহরের বড় বড় ভবনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার লাগাতে হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে উপকমিটি গঠন করা হবে।


সভায় ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি বিষয়েও অবহিত করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসকে সামনে রেখে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। ওইদিন নিহতদের স্মরণে সারাদেশ রাত ৯ টা থেকে ৯ টা ০১ মিনিট পর্যন্ত ব্ল্যাকআউট থাকবে।


গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে সকল প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ মোনাজাত ও আলোচনা সভার আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।


মহান স্বাধীনতা দিবস প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক শুদ্ধ মাপে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ২৬ মার্চ ভোরে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ও ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এরপর ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এদিন জেলা উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।


সভায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিলাদ, দেয়ালিকা, স্যুভেনির প্রকাশ করা হবে। বিকাল ৪ টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সকল স্কুলে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।

 

সভায় প্রসঙ্গক্রমে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সবাইকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, বিশ্বের ৬০টি দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনা ভাইরাস রোধে কমিটি গঠন করা হবে।


সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম জাকারিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুল আবছার, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস এস আর মাসুদ রানা, ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঞাসহ সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।