করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে পৌর হকার্স মার্কেট কাঁচাবাজার ফেনী সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। ফেনী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আজ শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) হতে সাময়িকভাবে বাজার স্থানান্তর করা হয়।


বাজার স্থানান্তরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আপত্তি না থাকলেও ব্যবসায়ীদের অসন্তোষ রয়েছে ব্যবস্থাপনা নিয়ে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছে শহরের বড় বাজারস্থ কাঁচা বাজার উন্মুক্ত স্থানে না আসায়। এতে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির আশংকা করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।


সুলতান মাহমুদ পৌর হকার্স মার্কেটের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, গতকাল দুপুরে বাজার স্থানান্তরের কথা জানানো হয়েছে। অল্প সময়ে একটা বাজার অন্যত্র সরিয়ে নেয়া অসাধ্য বিষয়। ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এলেও এখানে অব্যবস্থাপনা চরম। খোলা আকাশে সকাল হতে বিক্রেতারা তীব্র ধুলাবালি আর গরমে অতিষ্ঠ, এরপর বৃষ্টি। নেই পানির ব্যবস্থা, নেই ক্রেতা।


ফারুক বলেন, শহরে দুটি বড় কাঁচা বাজার রয়েছে। শুধু আমাদের সরিয়ে দিয়ে বড় বাজার না সরালে আমরা বড় রকম ক্ষতির মুখে পড়ব। কোনো ক্রেতা এ গরমে কাঁচাবাজার করতে আসবে না, সবাই বড় বাজারে ভীড় করবে।


ফেনী পৌরসভা ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী বলেন, আবর্জনা পরিস্কারের জন্য মাঠে একটি গাড়ী সার্বক্ষণিক দাঁড়ানো আছে। একজন সুপারভাইজারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম মনিটরিং করছে। অসুবিধা কিছু থাকবেই কারণ এতবড় বাজার সরিয়ে আনা সহজ কিছু নয়।


তিনি জানান, ইতোমধ্যে হকার্স মার্কেটের মূল সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, চলাচল একমুখী করা হয়েছে, গলিগুলো পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। তবু প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বাজার স্থানান্তরে যা কিছু করতে হয় করবো।


মুজিবুর রহমান নামে একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, আজ সকাল থেকে মাথায় প্রচন্ড রোদ নিয়ে বসে আছি। গরমে আমার সবজিগুলো সব শুকিয়ে যাওয়ায় ক্রেতার কিনতে চাচ্ছে না। হয়ত সেগুলো আজ মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে।


দেশীয় মাছ বিক্রেতা বাদল বলেন, আজ শিং মাছ নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু গরমে সেগুলো মরে যাচ্ছে। কেউ কিনতে চাইছে না। মাথার ওপর কিছু থাকলে এত সমস্যা হত না।


বেলা ১২টা নাগাদ বাজার পরিদর্শনে আসেন ফেনী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা। ব্যবসায়ীদের দাবী ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, এখন ব্যবসার চেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা জরুরী। যেকোনো মূল্যে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।


তিনি বলেন, এটি সাময়িক স্থানান্তর তাই কিছু সমস্যা থাকবে তা ধীরে ধীরে কমবে। তবু নিত্য প্রয়োজনে সকলকে বাজারে যেতে হয়। এক্ষেত্রে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।


তিনি জানান, পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে মুরগী ও গরুর মাংস শনিবার হতে পূর্বের নিয়মে হকার্স মার্কেটে বসবে, মুদি দোকান সকাল ৬টা হতে বিকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। বড় বাজারস্থ কাঁচাবাজার স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি জানান, এ নিয়ে আলোচনা চলছে।