কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদান কর্মসূচির আওতায় ফেনী সদর উপজেলার ২ কৃষককে কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয়েছে। যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ১টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার। আজ বুধবার ( ২২ এপ্রিল) সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানাসহ কৃষি কর্মকর্তারা তাদের হাতে এসব বুঝিয়ে দেন।


এতে কাজীরবাগের কৃষক আব্দুল হাই চৌধুরী ১টি রিপার যন্ত্র ও ফাজিলপুরে কৃষক ওমর ফারুক কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার পেয়েছেন।


সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ধান কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই করার জন্য সরকারের ভর্তুকিতে দুই কৃষককে এসব যন্ত্র প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার যন্ত্রের বাজার মূল্য ৩০লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এতে সরকার ভর্তূকি দিচ্ছে ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। আর কৃষক দিয়েছেন ১৬লক্ষ টাকা। রিপার বাজার মূল্য ১লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, সরকার ভর্তূকি দিচ্ছে ৯০ হাজার টাকা।


কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপকারিতা প্রসঙ্গে কৃষি প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন খান বলেন, প্রতি একর কৃষি জমিতে ধান কেটে ঘরে আনতে ১৭জন শ্রমিকের প্রয়োজন। কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে মাত্র দুই ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া এবং বস্তাবন্দী করা সম্ভব। আর রিপার দিয়ে ১ ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটা সম্ভব। এর ফলে কৃষকের সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। কৃষক কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবে।


উপকারভোগী কৃষক আবদুল হাই চৌধুরী বলেন, আমি রিপার মেশিন নিয়েছি। এ যন্ত্র দিয়ে নিজের জমির পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের ধান কাটা যাবে। যেখানে একজন কৃষকের ১০০শতক জমির ধান কাটতে খরচ হতো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, সেখানে মেশিনের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকায় ১ একর জমির ধান কাটা যাবে। তিনি বলেন, সরকারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বাড়তি আয় পাবো।


কৃষক ওমর ফারুক বলেন, এ মেশিনের সাহায্যে অতি অল্প সময়ে ধান ঘরে তোলা সম্ভব। জনবলের জন্য অনেক সময় ফসল ঘরে তুলতে দেরী হয়। অধিক খরচের কারণে লাভ কমে যায়, অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতিও হয়। উন্নত যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কৃষি লাভজনক ব্যবসা হবে।


এর আগে ভর্তুকির জন্য কৃষকের তালিকা চুড়ান্তকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন খান জানান, কৃষি শ্রমিকের অভাব, শ্রমিকের উচ্চ মূল্য, কৃষিতে মানুষকে অনাগ্রহী করে তুলছিল। এসব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ধান চাষ করলে উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে। কৃষক অবশ্যই লাভবান হবে। সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচবে।


কৃষকদের আনুষ্ঠানিকভাবে যন্ত্রপাতি হস্তান্তরের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার কাজীরবাগে মালিপুর ব্লকের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নুরুল আলম ভূঞা, ফাজিলপুরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবু তৈয়ব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।