রেজিয়া খাতুন (৪০) প্রতিবছর নিজেই জমিতে ধান চাষ করেন। পাকা ধান কেটে নিজেই ঘরে তোলেন। এভাবেই চলছে তিন সন্তান আর স্বামীকে নিয়ে টানাটানির সংসার।


রেজিয়ার বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের সুন্দরপুরে। এবছর নিজে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে হয়নি, স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আজ শুক্রবার (১ মে) তার ধান কেটে ঘরে নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বেজায় খুশি রেজিয়া বলেন, অভাবের সংসার তাই কষ্ট হলেও নিজে করি। ১০ বছর ধরে কৃষি কাজ করি, এখন আগের মত শক্তি নেই। ছেলেরা আমার অনেক উপকার করেছে। গত কয়েকদিন বৃষ্টি দেখে খুব ভয়ে ছিলাম, একা কাজ করে সব ধান ঘরে তুলতে পারবো কিনা।


তিনি বলেন, ঘরে স্বামী, তিন সন্তান নিয়ে আর্থিক অনটনে আছি। প্রতি বছর একজন হলেও দিনমজুর খাটাই কিন্তু এবার জামানো কোন টাকা নেই তাই একা সব করছি। স্বামী অসুস্থ, তার পক্ষে মাঠে কাজ করা সম্ভব নয়। বড় মেয়ে ক্লাস নাইনে পড়ে, বড় হচ্ছে তাদের ঘর থেকে বের হতে দেই না।


নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে রেজিয়া বলেন, অনেক বছর অন্যের গরু বর্গা করেছি। জমানো টাকা দিয়ে গতবছর গরু কিনেছি। এখন আমার কাছে দুইটি গরু আছে।


শৈশবে বাবা মা হারানো রেজিয়ার বিয়ে হয়েছে ২০ বছর আগে। স্বামীসহ বাপের ভিটায় থাকেন। রিকশাচালক অসুস্থ স্বামী সবসময় আয় করতে পারে না। তাই দশবছর পূর্বে নিজেই সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নেন।


ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু জানান, রেজিয়া খাতুনের খবর জানতে পেরে আমরা তার জমির ধান কেটে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছাত্রলীগের ২১জন নেতাকর্মীরা মিলে আজ তার ৫৪ শতক জমির ধান কেটে দিচ্ছি। সারাদিন কাজ করে ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ায় আমরা সবাই মাঠে ইফতার করেছি।


বাবলু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা ধান কাটার দায়িত্বটুকু হাতে নিয়েছি।