‘করোনাভাইরাস সৃষ্ট দুর্যোগে সুযোগ এসেছে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার। এমন মহৎ কাজ করার সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করতে চাইনি।’

বিগত এক মাসে সরকারি সহায়তা ছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরশুরামে ৩ হাজার মানুষকে সহায়তা করেছেন পরশুরাম পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। সোমবার (৪ মে) রাতে সে কার্যক্রমের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে এভাবে নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন তিনি প্রতিবেদকের কাছে।

অসহায় মানুষকে সাহায্য করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাজেল বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রবণতা কাজ করত। সে থেকে সবসময় মানুষের যেকোন বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমান এ সংকটময় সময়েও তাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি অবিরত। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেই চেষ্টা করে যাব।’

গত মাসের ৪ তারিখ হতে শুরু হয় এ সহায়তা কার্যক্রমের। সে থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সহায়তায় গোপনে উপজেলার নিন্ম আয়ের মানুষদের ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছানো হচ্ছে সহায়তা। খোলা হয়েছে সাহায্য প্রার্থীদের জন্য হটলাইন। ফোন করলেই রাতের আঁধারে তাদের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে সহায়তা।

এ কার্যক্রমের প্রশংসা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াছমিন আকতার বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে মেয়রের এমন একটি কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, সরকারি ত্রাণ বন্টনে অনেক প্রক্রিয়াকরণের বিষয় জড়িত থাকে। এতে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে কিছু বাড়তি সময় লেগে যায়।

মির্জানগর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টু বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অস্বচ্ছল পরিবার সাজেল ভাইয়ের সহায়তা পেয়ে উপকৃত হয়েছে।

চিথলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, তার এ উদ্যোগের কারণে সরকারি সহায়তা ছাড়াও বাড়তি পরিবারকে সহযোগিতা করা সম্ভব হয়েছে।

সহায়তা বিতরণ কার্যক্রমে দিনরাতে খেটেছে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন ভাবন বলেন, পরশুরামের কোন মানুষ যাতে খাদ্যাভাবে কষ্ট না করেন সেজন্য সাজেল ভাইয়ের নির্দেশানাক্রমে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, কোন অসহায় পরিবারের খোঁজ পেলেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গোপনীয়তা বজায় রেখে তাদের ঘরে সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাব বলেন তিনি।

সোমবার সন্ধ্যায় এ কার্যক্রমের ১ মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে পরশুরাম সরকারি কলেজ রোডে এক বৈঠকে মিলিত হন তারা। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত হোসেনসহ পৌর কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।