এখন থেকে ফেনীর সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা হবে নোয়াখালী আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজ পিসিআর টেস্ট ল্যাবে। আজ বুধবার (১৩ মে) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবির স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, বৃহস্পতিবার হতে ফেনীর করোনা পরীক্ষার ফলাফল নোয়াখালী ল্যাব হতে জানানো হবে।

তিনি বলেন, সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশী নমুনা চট্টগ্রামের দুই ল্যাবে জমা হয়ে থাকে। ফলে যথাসময়ে ফলাফল নিরূপন অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। নোয়াখালীতে মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটো ল্যাব চালু হওয়াতে বৃহত্তর নোয়াখালীর নমুনা পরীক্ষা সেখানে করা হবে।

ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রজ্ঞাপনের আলোকে করোনা শনাক্তে ফেনীর নমুনা নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হবে। এতে ফলাফল জানতে বিড়ম্বনা কমে যাবে। দ্রুততর সময়ের মধ্যে ফলাফল জানা যাবে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে বিআইটিআইডি ও সিভাসুতে চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জেলার নমুনা পরীক্ষার ফলে দীর্ঘজট তৈরি হয়েছে। এতে করে ফেনীতে রোগ নিরূপণে সংগৃহীত নমুনা ফলাফল পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত।

ট্রমা সেন্টারে ভর্তিকালীন নিজের ও পরিবারের নমুনার ফলাফল পেতে চরম ভোগান্তি প্রসঙ্গে করোনা হতে সুস্থ হওয়া সোনাগাজী ক্লিনিকের ল্যাব টেকনিশিয়ান সোহাগ বলেছিলেন, ‘করোনায় নয় স্ট্রোক করে মরে যাব।’

ফলাফল বিলম্বে করোনা পজিটিভ ব্যক্তি না বুঝে এবং অন্যের জানা না থাকায় পরস্পরের সংস্পর্শে এসেছেন। চলতি মাসের ২ তারিখ ফুলগাজীর আক্রান্ত প্রথম রোগী অসুস্থতা নিয়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে এলে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শের পরও অভিবাবক রোগী নিয়ে বাড়ি চলে যায় এবং ৪ তারিখ আরও বেশী অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হয়। ৬ তারিখ রাতে উক্ত রোগীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তার সংস্পর্শে আসা মানুষগুলোও স্বাস্থ্য বিভাগে সন্দেহের তালিকায় যুক্ত হয়।

চট্টগ্রামের করোনা টেস্টিং সেন্টার বিআইটিআইডি ল্যাব ইনচার্জ অধ্যাপক ডাক্তার শাকিল আহমেদ বলেন, আমরা ১২ ঘন্টা কাজ করে সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ২২০টি নমুনা ফলাফল নিশ্চিত করতে পারি। অথচ প্রতিদিন নমুনা আসছে প্রায় সাড়ে চারশোর বেশী। এতে ফলাফলের অপেক্ষায় প্রতিদিন নমুনা জমে যাচ্ছে। এখনো ৮০০র বেশী নমুনা ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে। যে কারণে নমুনার ফলাফল পেতে সময় লেগে যাচ্ছে।

নোয়াখালীতে ফেনীর নমুনা পরীক্ষা শুরু হওয়া প্রসঙ্গে বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ সাহেদুল ইসলাম কাওসার বলেন, আগে পুরো চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য দুটি মাত্র ল্যাব চালু ছিলো, বিভাগের সব জেলার নমুনা পরীক্ষা করতে অত্যধিক চাপের সম্মুখীন হওয়াতে ফলাফল জানতে অনিচ্ছাকৃত বিলম্ব হতো। বর্তমানে ল্যাব সংখ্যা বাড়াতে এবং বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)'র নমুনা প্রেরণের সুষম বন্টনকৃত এই নির্দেশনা কার্যকর হলে ফলাফল জানানোর বিলম্বজনিত বিড়ম্বনা থেকে স্বাস্থ্য বিভাগ মুক্তি পাবে এবং সামগ্রীক ভাবে জনসাধারণের জন্যেও কিছুটা স্বস্তিদায়ক হবে।