অসহায়দের সহায়তা চেয়ে ফেইসবুকের একটি গ্রুপে দেয়া এক স্ট্যাটাসেই মিলেছে ৫শ জনের খাবার। পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের কয়েক যুবকের গড়া ‘আমাদের মির্জানগর’ গ্রুপ হতে দরিদ্র মানুষদের সহায়তার লক্ষ্যে তহবিল গঠনের লক্ষ্যে সকলের সহায়তা চেয়ে এ স্ট্যাটাসটি দেয়া হয়েছিল। আর এতে মিলেছে বেশ সাড়া।

স্ট্যাটাস দেয়ার ৫ দিনের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রায় ২শ স্বচ্ছল ব্যক্তির আর্থিক অনুদানে সংগৃহীত হয়েছিল ৩ লক্ষ ২ হাজার ৩ শ ৬১ টাকা। যার পুরোটায় ইউনিয়নের ব্যয় করা হচ্ছে স্থানীয় অসহায়দের ব্যক্তিদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদানে। এমনটিই জানিয়েছেন ওই গ্রুপের সদস্যরা।

এডমিন প্যানেলের সদস্য মোঃ মহি উদ্দিন মোহন বলেন, ইউনিয়নের যেসকল মানুষ বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকটে রয়েছে কিন্তু সরকারী বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিতরণকৃত সহযোগিতা করতে তহবিল গঠন করতে চেয়েছিলাম আমরা। আমাদের সে আহ্বানা স্বতঃস্ফুর্ত সাড়া দিয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের স্বচ্ছল ব্যক্তিরা।

তিনি বলেন, গঠিত তহবিল হতে সহায়তার করার লক্ষ্যে ৩০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবকরা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের অসহায় মানুষদের তালিকা করেছে। তালিকা অনুযায়ী ৫শ অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণের কাজ চলছে।

মানবতার সেবায় নিজেকে যুক্ত করতে পেরে গর্বিত গ্রুপের সদস্যরা। লোকমান মাহমুদ নামে এক সদস্য বলেন, এভাবে মানুষ আমাদের পাশে থাকবে তা ধারণার বাইরে ছিল। এ উদ্যোগের দ্বারা ইউনিয়নের মানুষ কিছুটা হলেও উপকৃত হবে বলে আশা করি, আর এখানেই আমাদের স্বার্থকতা।

তহবিল গঠনে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রবাসী, স্বেচ্ছাসেবকসহ স্বচ্ছল ব্যক্তিরা। দিনভর রোজা রেখে খাবারের প্যাকেট করে রাতের আঁধারে অসহায়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা বিলি করছে স্বেচ্ছসেবকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অনুদানকারী বলেন, আমি গ্রুপে যুক্ত হয়ে অনুদানের স্টাটাসটি চোখে পড়লে এমন একটি সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেষ্টা করেছি।

খাদ্যসামগ্রী বন্টনে নিয়োজিত আজাদ হোসেন শান্ত নামের এক স্বেচ্চাসেবক বলেন, ইফতারের পরে সাধারণত ঘরে শুয়ে থাকি।কিন্তু গতকয়দিন খাদ্যসামগ্রী বিতরণের কাজে আছি। পুরোদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় যখন খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট পেয়ে সুবিধাবঞ্চিত একজন মানুষের হাসি দেখি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপকারভোগী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গতকয়দিন আগে কিছু খাদ্যসামগ্রী পেয়েছিলাম। তা দিয়ে কয়দিন চললেও এগুলো না আসলে আবার অনাহারে থাকতে হত।

মির্জানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টু বলেন, অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দিতে এমন একটি গ্রুপের প্রচেষ্টা মির্জানগরের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ¦ল করেছে।

খাদ্যসামগ্রীর প্রতি প্যাকেটে চাল ৫ কেজি, ছোলা ১ কেজি, ডাল ১ কেজি, তেল ১ লিটার, চিনি ১ কেজি, মুড়ি ৫০০ গ্রাম ও সেমাই ২ প্যাকেট রয়েছে।