ফেনীতে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা। গত ১৬ এপ্রিল-৯ মে পর্যন্ত শনাক্ত ছিল মোট ৭ জন। আর গত ৪ দিনে মোট ১৯ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। বুধবার (১৩ মে) দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৬ সদস্যসহ ফেনীতে আরও ৭ ব্যক্তির দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

বুধবার (১২ মে) রাতে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখ করে ফেইসবুকে দেয়া এক পোস্টে সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, এদের মধ্যে ৬জন ছাগলনাইয়ার বাসিন্দা, অপরজন ফেনী সদরের।


এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬ জনে। আর সুস্থ হয়েছেন তিনজন।


সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, বুধভার বিআইটিআইডি ও সিভাসু দুটোর রিপোর্ট মিলিয়ে ৭জন শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৫ জন মহিলা ও দুইজন পুরুষ। তাদের বয়স ৭ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।


ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শিহাব উদ্দিন জানান, শনাক্ত ৬ জন যৌথ পরিবারের সদস্য। সর্দি কাশি থাকায় গত ৮ মে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। রাতে রিপোর্ট পেয়েছি। তাদের পুরো পরিবারকে লকডাউন করা হচ্ছে।


স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, তাদের কোন উপসর্গ নেই, তারা সুস্থ আছে। সিভিল সার্জন মহোদয়ের পরামর্শক্রমে তাদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে। এদের মধ্যে ৭ বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে। বাকীদের মধ্যে ৪জন মহিলা, একজন পুরুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, আক্রান্তরা ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সহযোগি সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও পরিবারের সদস্য।

এর আগে গত ১৬ এপ্রিল ফেনীর ছাগলনাইয়ায় জেলা প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এ নিয়ে উপজেলায় মোট ৭জন শনাক্ত হল। এর মধ্যে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি ফেনী কোভিড হাসপাতালে (ট্রমা সেন্টারে) চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।


অন্যদিকে ফেনী সদরে করোনা আক্রান্ত রোগী আরও একজন বেড়েছে। বুধবার নতুন শনাক্তকৃত ওই মহিলা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের ক্লিনার বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তার বাড়ি শহরের সুলতানপুরে। গতকাল মঙ্গলবার সদরে ২জন শনাক্ত করা হয়েছিল। এ নিয়ে সদরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ জনে।


জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার পর্যন্ত ফেনীতে সংগৃহীত ৮৮৯ নমুনার মধ্যে এরমধ্যে ৫৭৩টি নমুনার ফল পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার বর্তমানে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা দুই চিকিৎসক ও ফুলগাজীর ওই করোনা আক্রান্ত কিশোরীর ২য় দফায় সংগৃহীত নমুনার ফল নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান।


এর আগে রবিবার ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ ৮জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়। শনাক্তের সংখ্যার ভিত্তিতে আজ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্ত হল। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে দাগনভূঞা ৫জন, সোনাগাজীতে ২ জন, ফুলগাজীতে ২ জন ও অন্যান্য আরও ১ জন রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু, সরকারি কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন।