ফেনীতে প্রথমবারের মতো কৃষকের ঘরে উঠছে সূর্যমুখী ফসল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনী অফিস জানায়, জেলায় এবারই ১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুল আবাদ হয়েছে। চলছে বীজ সংগ্রহের কাজ, উৎপাদিত বীজের পরিমাণ ছাড়াতে পারে ৩০ টন।

বীজের বাজার প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-পরিচালক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, দপ্তরের রাজস্ব অর্থায়নে কৃষকদের মাঝে সার, বীজ প্রদান করে জেলায় সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদিত বীজ বিপণনের জন্য ইতোমধ্যে নোয়াখালীতে বেসরকারি সমন্বিত খামার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। উৎপাদিত সকল বীজ তারা কিনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে, কেজি প্রতি দাম দিয়েছে ৩৫টাকা।

বীজের দর প্রসঙ্গে উপ-পরিচালক বলেন, দাম একটু কম তবে বীজ হতে তেল প্রস্তুত করতে অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আরেকটু উচ্চ দরে কৃষকের বীজ বিক্রয় নিশ্চিত করতে। ভবিষ্যতে জেলায় এর চাষাবাদ বৃদ্ধি পেলে বীজের পরিমাণ বাড়বে, এতে ক্রেতার আগ্রহও বেড়ে যাবে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার জানান, উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে চাষকৃত সূর্যমুখী ফুল হতে ইতোমধ্যে কৃষক বীজ ঘরে তুলেছে। উৎপাদিত বীজের পরিমান প্রায় ৬ টন। তিনি জানান, একটি পরিপূর্ণ ফুলে ২০০ হতে ২৫০ গ্রাম বীজ হতে পারে।

বীজের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে সরিষা ভাঙ্গার মিলে সুর্যমুখী বীজ ভেঙ্গে তেল পাওয়া যায়। তবে তা অধিকতর শোধনের জন্য যথাযথ নয়। প্রতি ৫কেজি বীজ হতে কমপক্ষে ২লিটার তেল পাওয়া যাবে।

সদর উপজেলার গোবিন্দপুরে কৃষক মাঈন উদ্দিন বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে কৃষি অফিস থেকে আমাদের ৩জন কৃষককে বীজ ও সার দিয়েছিলো। চাষাবাদ শেষে আমরা ফসল উত্তোলন করেছি, ফলন ভালো হয়েছে। উপযুক্ত মূল্য পেলে আমরা লাভবান হবো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনী অফিস সূত্র জানায়, গতবছরের ডিসেম্বর মাসে জেলার ৫০জন কৃষককে রাজস্ব অর্থায়নে সার ও সূর্যমুখী বীজ প্রদান করা হয়েছে। নূন্যতম একবিঘা জমি রয়েছে এমন ৫০জন কৃষককে বিঘাপ্রতি ১.৩০ কেজি বীজ, ২৬ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি এমওপি সার, ২৬ কেজি টিএসপি, ২২ কেজি জিপসাম, ১ কেজি দস্তা, দেড় কেজি বোরিক এসিড ও ১৩ কেজি ম্যাগনেশিয়াম সালফেট দেয়া হয়েছে।


সূত্র জানায়, মোট ৫০টি প্রদর্শনী প্লটসহ সদরে ২ হেক্টর৷ ছাগলাইয়ায় ১ হেক্টর, ফুলগাজী ২ হেক্টর, পরশুরাম ১ হেক্টর, দাগনভূঞা ১ হেক্টর এবং সোনাগাজীতে ৩ হেক্টর জমিতে কৃষিবিদদের তত্ত্বাবধানে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে।