নতুন করে আাবারও কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল প্রাপ্তির পুরনো বিড়ম্বনায় ফেনী। বুধবার পর্যন্ত নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে স্থাপিত পিসিআর ল্যাবে ফলাফলের অপেক্ষায় ৪২০জনের নমুনা। ফলে অসুস্থবোধ করে নমুনা দেয়া মানুষ রয়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। পাশাপাশি উৎকন্ঠায় করোনা রোগীর সংস্পর্শে থাকায় পরীক্ষার জন্য নমুনা দেয়া মানুষরাও। সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররাও এমন পরিস্থিতিকে মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় স্বাভাবিক মনে করছেন না।


বুধবার ফেনী জেলা সিভিল সার্জন প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ১৩ মে হতে সংগৃহীত ২ হাজার ৬৬টি নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য নোয়াখালীতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ফলাফল পাওয়া গেছে ১ হাজার ৬৪৬টি নমুনার।


জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত ফেনী শহরের একজন ব্যবসায়ী কোভিড-১৯ পরীক্ষায় রবিবার নমুনা দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুর পর্যন্ত ফলাফল না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ফল জানার অপেক্ষায় থেকে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছি।


সিভিল সার্জন অফিসে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ১৩ মে নোয়াখালীতে প্রেরিত নমুনার ফলাফল পরদিনই চলে আসে।


তিনি জানান, ঈদের আগ পর্যন্ত ফলাফল প্রাপ্তি দ্রততর হলেও ঈদের পর থেকে তা ধীরগতি হয়ে যায়। এর কারন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সঙ্গত কারনে আমাদের নমুনা সংগ্রহের পরিমান বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষাগারের সক্ষমতা আাগের জায়যগাতেই রয়ে গেছে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে জট।


একই সূত্রের তথ্যমতে, ১৩মে পর্যন্ত চট্টগ্রামে বিআইটিআইডি ও সিভাসুতে পরীক্ষার জন্য প্রেরিত নমুনার সংখ্য ছিল ৮৮৯। এরমধ্যে ৫৭৩টি নমুনার ফল আসে এবং অপেক্ষমান ছিল ৩১৬টি।


নমুনাজটের প্রেক্ষিতে ১৩ মে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবির সাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে ফেনীর সংগৃহিত নমুনা নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ পিসিআর টেস্ট ল্যাবে পরীক্ষার নির্দেশনা দেয়া হয়।


বিলম্ব প্রসঙ্গে ফেনী করোনা ডেডিকেটেড হসপিটাল ট্রমা সেন্টারের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা করোনা সমন্বয়ক ডাঃ কাজি সানজিদা জানান, ঈদে অনেক মানুষ ঢাকা চট্টগ্রাম হতে ফেনী এসেছেন। এতে করে সংক্রমণের পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ বেশী হয়েছে। বিশেষ করে আক্রান্তের সংস্পর্শে সন্দেহজনক বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।


তিনি জানান, নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ফেনী ছাড়াও নোয়াখালীর একাধিক উপজেলার সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাছাড়া নোয়াখালীতে কোভিড শনাক্তের সংখ্যা ফেনীর চেয়ে বেশী। ফলে সক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত নমুনা যাওয়ায় সেখানে ধীরে ধীরে অপেক্ষমান তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।


ফেনী সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, রবিবার করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ফেনীতে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ফেনীতে ল্যাব স্থাপন সম্ভব হলে পরীক্ষার দ্রুত ফল প্রাপ্তি সম্ভব হতে পারে।


উল্লেখ্য, ফেনীতে বুধবার রাত পর্যন্ত ফেনীতে ১৯৩জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।