পাত্র মোঃ নাজমুল হোসেন ইতালী প্রবাসী। পাত্রী ১৫ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। দুই পরিবারের সম্মতিতে শুক্রবার (৫ জুন) সন্ধ্যায় ঠিক হয়েছিল বিয়ের দিন তারিখ। শহরের রাজাঝির দীঘি পাড়ের ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্টের ২য় তলায় আয়োজন করা হয়েছিল অনুষ্ঠানের। পাত্রী অনুপস্থিত থাকলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছিলেন ৬০জনের মত অতিথি। চলছিল খাওয়া দাওয়া।


সবই ঠিক ছিল, কিন্তু মাঝখানে বাধ সাধলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামান। খবর পেয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে সেই ‘বাল্যবিবাহ’ ঠেকিয়ে দিলেন তিনি। একই সাথে বাল্যবিবাহের অপরাধে পাত্রের ৩০ হাজার টাকা এবং একইসাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ হতে বিরত থাকবে মর্মে মুচলেকা নেয়া হয়। পাশাপাশি ফাইভ স্টার হোটেলকে জনসমাগম করার অপরাধে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।


মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানার মাধ্যমে খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে ফাইভ স্টার রেষ্টুরেন্টে গিয়ে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। তিনি বলেন, রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখি প্রায় ৬০ জন মানুষ সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে জনসমাগম ঘটিয়েছেন। অতিথিদের সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সতর্ক করা হলেও অনুষ্ঠানের খাবারগুলো জব্দ করা হয়েছে।


নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ফেনী সদরের কাজীরবাগ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাপুর গ্রামে পাত্রীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ১৫ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রী। তার বাবা নেই। তার মা নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। তবে মেয়েটির পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে জরিমানা করা হয়নি। তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে এবং মুচলেকা নেয়া হয়েছে। আর পাশাপাশি তার মাকে বিধবা ভাতা প্রদানের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

এরআগে শহরের হাজারী রোডে পাত্রের বাসায় গিয়ে তাদের মুচলেকা নেয়া হয়। একইসাথে পাত্রের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তিনি বলেন, রেস্টুরেন্টের জব্দকৃত প্রায় ৫০ প্যাকেট খাবার স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছিন্নমুল ও ভাসমান মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়।


অভিযানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন।