করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেশের তিনটি বিভাগ, ৫০টি জেলা ও ৪০০টি উপজেলাকে পুরোপুরি লকডাউন (রেড জোন বিবেচিত) দেখানো হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলা। এছাড়া আংশিক লকডাউন (ইয়েলো জোন বিবেচিত) দেখানো হচ্ছে পাঁচটি বিভাগ, ১৩টি জেলা ও ১৯টি উপজেলাকে। আর লকডাউন নয় (গ্রিন জোন বিবেচিত) এমন জেলা দেখানো হচ্ছে একটি এবং উপজেলা দেখানো হচ্ছে ৭৫টি।

মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে শনিবার সর্বশেষ আপডেট করা তালিকায় চট্টগ্রাম বিভাগে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ফেনী, খাগড়াছড়ি, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীকে। এই বিভাগে আংশিক লকডাউন বান্দরবান, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি।

এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কোনো এলাকায় যদি প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৩০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় তাহলে ওই এলাকা রেড জোনে অবস্থান করবে। তবে ঢাকার বাইরে কোন এলাকায় ১ লাখের মধ্যে ১০ জন করোনা রোগী থাকলে সেই এলাকাও রেড জোনের আওতায় ধরা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ঢাকা বা ঢাকার বাইরের কোন এলাকায় ১ লাখে ৩-১৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলে ইয়েলো জোন হিসেবে ধরা হবে। আর কোনো এলাকায় অনেকটাই নিরাপদ এলাকা হিসেবে যেখানে একেবারে কম করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলে তাকে গ্রিন জোন হিসেবে ধরা হবে।

জোনিং নিয়ে প্রস্তাবনা চুড়ান্ত করা হয়েছে। সেটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা পাঠাবো। এ বিষেয় প্রস্তবনায় সংযোজন ও বিয়োজন করে প্রধানমন্ত্রী চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন বলেন জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রী।

সেই হিসেবে ফেনীর প্রতিটি উপজেলাই ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত হবে। আজ রবিবার (৭ জুন) পর্যন্ত ফেনীর ৬টি উপজেলায় মোট ২৬৪জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। গত ২৯ মে হতে ৭ জুন পর্যন্ত ৯দিনে ১৭১জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে সদরে আক্রান্তের সংখ্যা একশ’র কাছাকাছি অবস্থান করছেন। আজ রবিবার পর্যন্ত এ উপজেলায় জেলার সর্বোচ্চ ৯২জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলায়। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ৮৫ জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ৩৬জন, ছাগলনাইয়ায় ২৭জন, ফুলগাজীতে ১০জন ও পরশুরামে ৯জন।

গত ১৬ এপ্রিল জেলার ছাগলাইনাইয়া উপজেলায় এক যুবকের শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মাঝখানে আক্রান্তের হার সীমিত থাকলেও মে তে এসে তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। এর আগে ১৬ এপ্রিল হতে ৯ মে পর্যন্ত ফেনীতে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ ছিল ৭ জনে।

স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, ২৯ মে শুক্রবার ফেনীতে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। আর শুক্রবার (৫ জুন) একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।