বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে ‘সীমিত পরিসরে’ হজ পালনের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী, সৌদি আরবে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মধ্যে সীমিত সংখ্যক ব্যক্তি এবার হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ এবার কোনো দেশ থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা হজে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।

এ ঘোষণা অনুযায়ী, এবার হজে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশে থেকে যারা নিবন্ধন করেছিলেন, তারাও কেউ হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন না। একইভাবে অন্য কোনো মুসলিম দেশের কোনো নাগরিকও হজ পালনের জন্য যেতে পারবেন না।

সোমবার (২২ জুন) সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।

খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যেসব নাগরিক বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন, কেবল তাদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ এবার হজ পালনের সুযোগ পাবেন। ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি চলতে থাকায় এবং বিশাল জনসমাগমের মধ্যে করোনার বিস্তার ঘটার ঝুঁকি থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বছর হজ পালনে সৌদি আরব যেতে বাংলাদেশের ৬৫ হাজার ৫১২ জন মুসল্লি নিবন্ধন শেষ করেছিলেন। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসায় বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকেও হজ নিয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য জানানো হয়নি। সৌদি আরব সরকারের চূড়ান্ত ঘোষণার ওপরই নির্ভর করেই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে এমনটিই ধারণা দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। সৌদি সরকারের আজকের ঘোষণা অনুযায়ী এটা নিশ্চিত হয়ে গেল, অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশ থেকে হজ করতে আগ্রহীরাও এ বছর হজ পালনের সুযোগ পাবেন না।

করোনাভাইরাসের অব্যাহত সংক্রমণের মুখে হজ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় শুরু থেকেই। এ পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া এবার তাদের নাগরিকদের প্রতি হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। অন্য মুসলিম দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা না দিলেও এবার সৌদি আরবই জানাচ্ছে, তারা কাউকে হজ পালনের জন্য সৌদি আরব আসতে অনুমোদন দেবে না।

জানা যায়, প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলমান সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে যান।

চলতি বছর পবিত্র হজে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে যারা নিবন্ধন করেছিলেন, তারা তাদের টাকা যে কোনও সময় ফেরত নিতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নুরুল ইসলাম জানান।

মঙ্গলবার ( ২৩ জুন) সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, নিবন্ধিত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ যদি চান তারা টাকা তুলে নিতে পারবেন। আবার কেউ যদি চান আগামী বছর হজে যাওয়ার জন্য তা রেখে দেবেন, তাহলে সেটাও করা যাবে। কেউ টাকা রেখে দেন তাহলে তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী বছর হজে যেতে পারবেন।

টাকা ফেরত নিয়ে কোনও হয়রানির সুযোগ নেই উল্লেখ করে সচিব বলেন, টাকা উত্তোলনে কারও সমস্যা যাতে না হয় সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। ব্যাংকে টাকা সঠিকভাবে গচ্ছিত রয়েছে। কারো কোন ভয় নেই।