ফেনী শহরের একাডেমী এলাকার বনানী পাড়ার বস্তিতে ৩ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তাকে ঘর ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিশুটির মা সুফিয়া আক্তার।

এই প্রতিবেদকের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, আমি থানায় জিডি করে আসার পর হতে আমাদের বাসার মহিলারা আমাকে মারার হুমকি দিচ্ছে। আমার নামে উল্টো মিথ্যা মামলা দেবার ভয় দেখাচ্ছে। বস্তির ম্যানেজার আমাকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলছে।

তিনি আরও বলেন, আমাকে ৩ হাজার টাকা প্রদানের প্রস্তাব করছে যদি আমি পুলিশকে বলি আমার অভিযোগ মিথ্যা।

মঙ্গলবার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। তার সন্ধান এখনও বের করতে পারেনি পুলিশ।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার (২ অক্টোবর) থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন। তিনি জানান, আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত আসামীকে ধরার চেষ্টাও চালাচ্ছে পুলিশ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহরের বনানী পাড়া এলাকার পুরাতন রেললাইন সংলগ্ন ডুবাই ট্রাস্টের বস্তিতে মা-বাবা, স্ত্রী, ছোটভাই নিয়ে ভাড়া থাকেন রাজমিস্ত্রী শহীদুল ইসলাম। তারও ৫ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। একই বস্তিতে সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করেন স্বামী পরিত্যাক্তা সুফিয়া আক্তার। শহীদুলের মেয়েটি ধর্ষিতা শিশুটির খেলার সঙ্গী। গত ১৬ দিন আগে দুপুরে তার ৩ বছরের শিশু কন্যাকে একা পেয়ে ফুসলিয়ে ধর্ষণ করে শহীদুল। শিশুটি কিছু না জানাতে পারলেও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন দেখে মায়ের সন্দেহ হয়। পরে তার পরনের প্যান্ট পেলে শিশুটি প্রতিবেশী শহীদুলের কথা মাকে জানায়।

সুফিয়া আক্তার জানান, মঙ্গলবার ঘটনাটি জানতে পারি। এ ব্যাপারে সেদিন শহীদুলের পরিবার আমাকে ওদের ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে স্বীকার করে যে এটা ভুল হয়ে গেছে। শহীদুল এবং তার বাবা-মা সবাই মিলে আমার কাছে ক্ষমা চায় আমি যাতে মাফ করে দিই। পরে আমি গিয়ে থানায় অভিযোগ করি। এরপর থেকে শহীদুল পালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার এ ঘটনার অনুসন্ধানে গেলে এই প্রতিবেদককে ওই বস্তিতে প্রবেশ করতে দেয়নি স্থানীয় কিছু লোকজন। পরে সুফিয়া আক্তারকে ফোন করে ডেকে অন্য জায়গায় এনে তার সাথে কথা বলা হয়। সে সময় তিনি বেশ ভীত ছিলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, পুলিশ আমার বাচ্চা মেয়েটির সাথে কথা বলে তার জবানবন্দী গ্রহণ করেছে। আমার শিশু বাচ্চা যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে তার উপর ভিত্তি করে আমি শহীদুলের সর্বোচ্চ বিচার চাই।

ওই শিশুটির সাথে কথা বললে সে ওই দিনের ঘটনার বিবরণ দেয়। সে জানায়, ওই সুমাইয়ার আব্বু (শহীদুলের কন্যা) আমাকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে এসব করে।

অন্যদিকে শহীদুলের বাবার সাথে প্রতিবেদক কথা বলতে চাইলে তিনি রাজী হননি। নিজেদের গ্রামের বাড়ির নাম ঠিকানা প্রকাশ করতে চান নি।

শিশুটির মা সুফিয়া ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফারুক হোটেলের সামনে ভ্যানগাড়িতে সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি ৪ কন্যা সন্তানের জননী।